জিল্লুর রহমান রাসেল, ফরিদপুর প্রতিনিধি :
বর্তমান বিশ্বের আলোচিত নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে সারা দেশে জরুরী সার্ভিস ছাড়া সকল কিছু বন্ধ রয়েছে। তেমনি ভাবে ফরিদপুরেও বন্ধ রয়েছে জরুরী সেবা ও নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান ছাড়া সকল কিছু। এ ব্যাপারে ফরিদপুর প্রশাসনের রয়েছে করা নজরদারি।
এমন অবস্থায় সাধারন মানুষের কাজ কর্ম বন্ধ থাকায় তাদের যেন না খেয়ে থাকতে হয় সে জন্য সরকারী ভাবে মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও বিভিন্ন মহল ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে মানবিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সহায়তা কালিন সময়ে দল মত জাতি সব কিছুর উর্দ্ধে উঠে মানবিক সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। তবে এই নির্দেশনা অনেকে না মানার কারনে হত দরিদ্ররা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সাহায্যর জন্য লাইন দিচ্ছে। এতে অনেকে অভিযোগ করে বলেছেন মুখ চিনে চিনে দেয়ার কারনে এমনটা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরা প্রকৃত হতদরিদ্রদের নাম দিলে এমনটা হতো না।
ঘরে খাবার নেই, পাচ্ছেন না কোন সাহায্য তাই ছুটে এসেছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ত্রাণের জন্য। অফিসের সামনে কথা হলো শহরের পৌর এলাকার আদর্শ নগর ২নং হাবেলী গোপালপুর এলাকার এরকম কয়েকজন হতদরিদ্রের সাথে। তারা বললেন বাবা বুঝেনতো পেট, সেতো কোন কথাই মানছেনা। আমরা এখন আর পারছিনা বাবা। কি করবো? কোন সহায়তা না পেয়ে ছুটে এসেছি পুলিশের কাছে যদি কোন সাহায্য পাই। গত কয়েকদিন এক বেলা কোন সময়ে না খেয়ে সময় কাটছে আমাদের।
এসপি অফিসের সামনে মমো বেগম স্বামী- লাভলু খান, নূরজাহান বেগম স্বামী- আঃ রব ব্যাপারী, রুপা বেগম স্বামী- লুৎফর মোল্লা তাহারা জানান, ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়েছে তবে এখনো কোন সহযোগীতা পাই নাই।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ সাইফুজ্জামান এর কাছে দিনমুজুর, নারী-পুরুষ স্ব-শরীরে গিয়ে মানাবিক সহায়তা পেতে আবেদন জানাচ্ছেন। দরিদ্র ব্যক্তিরা জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সহ স্থানীয় নেতারা মুখ চিনে চিনে মানবিক সহায়তা দিচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরা আমাদেরকে পাত্তা দিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ সাইফুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কাছে তো কোন সরকারী খাদ্য সামগ্রীর বরাদ্দ নেই। তবে আমাদের পুলিশ সদস্যরা মাসের বেতন থেকে অর্থ সংগ্রহ করে কিছু কিছু করে সহযোগীতা করেছি।
তিনি বলেন একটি ফান্ড তৈরী করে এ পর্যন্ত প্রায় ৭০০ লোকের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরোও বলেন, আমাদের সরকারী নম্বরে অনেকে এসএমএস দিয়েছে নাম ঠিকানা সহ মানবিক সহায়তার জন্য।
ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানা এলাকার মাচ্চর, শিবরামপুর, পৌর এলাকার ভাটি লক্ষীপুর, কোর্টপাড় এরকম বিভিন্ন এলাকার মানুষ এসএমএস করে আসছে মানাবিক সহায়তার পেতে। এদের মধ্যে অনেকেই আছে মধ্যবিত্ত পরিবারের।
বিভিন্ন পেশার মানুষও রয়েছে, শিক্ষকতা পেশার মানুষ আছে। অনেকেই এলাকায় চক্ষু লজ্জার কারনে বলতে পারছে না স্থানীয়দের কাছে। বর্তমানে ফরিদপুর পুলিশ প্রশাসন মানুষের বিপদেও বন্ধু হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে বিধায় সাধারণ মানুষ তাদের আর্থিক কষ্টের কথা আমাদের কাছে জানাচ্ছে।
তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনের কাছে ত্রাণের কোন ফান্ড না থাকলেও হতদরিদ্ররা অফিসে এসে ভিড় করছে। আমাদের সাধ্য অনুযায়ী একটি ফান্ড তৈরী করে সহযোগীতা করতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এটা তো আর ব্যাপক পরিসরে করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না।
রিজার্ভ অফিসার উপপরিদর্শক মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের এখানে কেউ আসলে প্রথমে তার নাম পরিচয় লিখে রাখি তারপর খোঁজ খবর নিয়ে মানবিক সহায়তা হিসেবে কিছু খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়ে আসা হয়। তবে সেটা তো আর আমাদের ব্যাপক পর্যায়ে করা সম্ভব হয় না।