• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৭ই জুন, ২০২৩ ইং
Mujib Borsho
Mujib Borsho

ডাক্তার না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা

ফরিদপুরে ডাক্তার নেই কোন বেসরকারী হাসপাতালে

জিল্লুর রহমান রাসেল, ফরিদপুর প্রতিনিধি করোনার ভয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন ডাক্তাররা। এ পরিস্থিতিতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন অন্যান্য রোগীরা। তারা চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে। এছাড়া ব্যাক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) না পাওয়ায় চিকিৎসা দিতে ভয় পাচ্ছেন তারা। তারা পিপিই না পেলেও জেলা, উপজেলার বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সরকারি – বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের পিপিই পড়ে ফটোসেশনের হিড়িক পড়ে গেছে।

সরেজমিনে বেসরকারী হাসপাতাল : ফরিদপুর শহরের নিলটুলিতে অবস্থিত অন্যতম বেসরকারী হাসপাতাল আরোগ্যে সদন প্রাইভেট হাসপাতাল। খোজ নিয়ে জানা যায় গত ২৩-০৩-২০ (সোমবার) থেকেই ব্যাক্তিগতভাবে রোগী দেখা বন্ধ করে দেন এই হাসপাতালের চিকিৎসকগণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, যেসব ডাক্তাররা এখানে প্রতিদিন রোগী দেখতেন এখন করোনার ভয়ে গত সোমবার থেকে রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়ে বাসাতেই অবস্থান করছেন তারা।আজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়,আটরশি থেকে গাইনি ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা এক মা ও তার মেয়ে বসে আছে, তাদের সাথে কথা বললে জানান কোন ডাক্তার নেই এখন আমরা কি করবো? আমরা সেই আটরশি থেকে এসেছি। পরে তাদেরকে একাধিক ক্লিনিকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। শিশু বাচ্চা নিয়ে আসা এক দম্পতি জানান তাদের বাচ্চা আজ দুদিন যাবৎ ডায়রিয়ায় ভুগছে কোন উপায় না পেয়ে আজ ডাক্তারের কাছে এসেছি কিন্তু রিসেপশন থেকে বলছে ডাক্তার আসবে না। কোন উপায় পাচ্ছিনা। সেখানে কর্মরত একজনের সাথে এ বিষয়ে কথা বলে জানা যায় শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ এ এইস সায়াদ ৩ টা থেকে রোগী দেখবেন তিনি গতকাল থেকে রোগী দেখা শুরু করেছেন এছাড়াও ডাঃ জেবুন্নেসা পারভীনও সীমিত পরিমাণ রোগী দেখা শুরু করেছেন।
শহরের সুপার মার্কেট সংলগ্ন ল্যাব এইড প্রাইভেট হাসপাতালে খোজ নিতে গেলে সেখানেও একই চিত্র পরিলক্ষিত হয়।সেখানে শুধুমাত্র ল্যাব খোলা রয়েছে পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য। সেখানেও কথা হয় এক দম্পতির সাথে যারা গাইনি ডাক্তারের কাছে এসেছে। কোন ডাক্তার না পেয়ে শুধু আল্ট্রাসনোগ্রাম করিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। সমরিতা প্রাইভেট হাসপাতালের চিত্র আরও খারাপ, সেখানে না হয় কোন পরীক্ষা নিরিক্ষা না দেখা হয় কোন রোগী, শহরের হাড় ভাঙা বিশেষজ্ঞ ডাঃ শাহীন জোদ্দার এর চেম্বার বন্ধ দেখে এক স্টাফের কাছে জানতে চাওয়া হয় তার এবং অন্যান্য ডাক্তারদের বিষয়ে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ স্টাফ বলেন, এই মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকেই তারা চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন, ফোন করলেও তারা রোগী দেখতে আসেন না। প্রতিদিনই রোগীরা এসে ফেরত যায়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, সর্দি, কাশি ও নিউমোনিয়ার উপসর্গ নিয়ে যারা গুরুতর অবস্থায় আসছেন তাদেরই আইসোলেশনে পাঠানো হচ্ছে। এসব রোগের সাধারণ রোগীদের ভর্তি না করে দুর হতেই দেখে ব্যবস্থাপত্র লিখে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রাইভেট চেম্বারেও রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন এসব চিকিৎসক। অনেকে তাদের চেম্বারের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য রোগী দেখা বন্ধের নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছেন। সরকারের নির্দেশনা তারা মানছেন না।
ফরিদপুরের চিকিৎসক নেতা ও ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আসম জাহাঙ্গির চৌধুরী টিটো ডাক্তারদের অবহেলার তথ্য সঠিক নয় দাবি করে বলেন, চিকিৎসকেরা তাদের নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলো। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইতিমধ্যে তাদের পিপিই (পারসোনাপল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট) দিয়েছেন। পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে। তিনি বলেন, যানবাহন চলাচল খুবই সীমিত হওয়ায় দুরদুরান্ত হতে রোগীরা আগের মতো আসতে পারছেন না বলে রোগীদের সংখ্যা কমে গেছে।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সরকারী হাসপাতালগুলোকে আমরা করোনা সন্দেহভাজনদের চিকিৎসা গুরুত্বের সাথে করার জন্য সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছি। কেউ যাতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত না থাকেন সেবিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে।
যে বিষয়টি নিয়ে ডাক্তারেরা উদ্বিগ্ন ছিলেন (পিপিই)সে বিষয়টি সমাধান হওয়ার পরও ডাক্তারেরা চেম্বার বন্ধই রেখেছেন। এখন প্রশ্ন একটাই! কেন?

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

জুন ২০২৩
শনিরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্র
« মে  
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।