করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার প্রথম জামাত রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৫ মে) সকাল ৭টায় প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।
এ সময় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নামাজ আদায় শেষে মোনাজাতে দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা করা হয়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের রূহের মাগফেরাত কামনা করা হয়। যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ রয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনা করা হয়।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত নির্বীঘ্নে আদায়ের জন্য বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নামাজ শুরুর আগে সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানানো হয়। এর আগে ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাতে অংশ নিতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা ছুটে আসেন।
এদিন সকাল ৬টায় মুসল্লিদের জন্য মসজিদে প্রবেশের জন্য গেট খুলে দেওয়া হয়। এরপর থেকে মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ শুরু করেন। মসজিদে হাত ধোয়া, জীবাণুনাশক কক্ষের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে মসজিদের পশ্চিম গেট বন্ধ ছিল।
বায়তুল মোকাররমে ঈদের আরও পাঁচটি জামাত পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জামাত সকাল ৭ টা ৫০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। এ জামাতের ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী, মুকাব্বির থাকবেন ক্বারী হাবিবুর রহমান মেশকাত।
সকাল ৮ টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠেয় তৃতীয় জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা এহসানুল হক, মুকাব্বির থাকবেন মাওলানা ইসহাক।
চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে। এ জামাতের ইমামতি করবেন পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম, মুকাব্বির থাকবেন মো. শহীদুল্লাহ।
পঞ্চম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে। এ জামাতের ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ওয়ালিয়ুর রহমান খান, মুকাব্বির থাকবেন খাদেম হাফেজ মো. আব্দুল মান্নান।
ষষ্ঠ ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১১ টা ১০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক উপ-পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রব মিয়া, মুকাব্বির থাকবেন খাদেম হাফেজ মো. আব্দুর রাজ্জাক।
মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে ১৩ দফা শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- নামাজের সময় মসজিদে গালিচা বিছানো যাবে না, নামাজের আগে পুরো মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে মুসল্লিদের, সবাইকে মাস্ক পরতে হবে, মসজিদে প্রবেশের আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে, মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না, নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
এ বছর বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি নির্দেশনায় জাতীয় ঈদগাঁয় ঈদের প্রধান জামাত বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে খোলা জায়গায় নামাজ না আদায়ের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এজন্য ঈদের নামাজ মসজিদে মসজিদে আদায় হচ্ছে।