খাগড়াছড়িতে রাস্তা নির্মাণে দুর্নীতি
বালুচুরি পলিমাটি কাজে ফাঁকিবাজ"
এস চাঙমা সত্যজিৎ,বিশেষ প্রতিনিধি (CHT) :
খাগড়াছড়ি জেলায় পানছড়ি উপজেলায় রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম – দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পাথর ছাড়া ইটের খোয়া, বালুর বদলে মাটি দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, সরকার খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় আন্ত:যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য উপজেলা থেকে উপজেলায় যোগাযোগের ব্যবস্থা সুযোগ-সূবিধা সহজ করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কতৃক রাস্তা নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে জেলার আন্ত:যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন, উপজেলার আভ্যন্তরিন রাস্তা নির্মাণ, গ্রমীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ।
জানা যায়, পানছড়ি কলেজ গেইট থেকে গঙ্গারাম পাড়া – রামসিং দেওয়ান পাড়া – কনারায় পাড়া হয়ে দীঘিনালা উপজেলার সাথে যোগাযোগের জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছর ধরে রাস্তা নির্মাণের কাজ করলেও মাত্র চার কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এসব রাস্তা নির্মাণ কাজে সিডিউল মোতাবেক কাজ করছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি, পাথর ব্যবহার না করে গুণগত মানহীন ইটের খোয়া ব্যবতার, বালুর বদলে মাটি ব্যবহার করা হয়েছে।
অভিযোগের মধ্যে রয়েছে রাস্তা নির্মাণের সময় প্রথম লেয়ারে কাজ করার সময় বালু না দিয়ে মাটি ব্যবহার করা হয়েছে। দ্বিতীয় লেয়ারে কাজের সময় বালু ও পাথরের কংকর দেওয়ার কথা থাকলেও মাটি ও ইটের খোয়া দেয়া হয়েছে। তৃতীয় লেয়ারেও অনুরূপ অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে। এভাবে অনিয়ম- দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে পাছড়ি উপজেলার আভ্যন্তরিন রাস্তাগুলোর নির্মাণ কাজ করার ফলে সম্পূর্ণ হওয়া কাজগুলোও পূন:পূন: মেরামত করতে হয়। বালুর বদলে মাটি পাথর ছাড়া ইটের খোয়া, সরকারের অর্থ অপব্যয় হলেও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের লোকজনসহ ঠিকাদারের পকেটে পোয়া বারো হয়েছে।
রাস্তা নির্মাণ কালীন পানছড়ি উপজেলা প্রকৌসশলী অরুন কুমার দাসকে বালুর গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন বালুর গুণগতমান পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে যে সব বালুর বিষয়ে গুণগতমান নিয়ে পরীক্ষা ছাড়াই ঐ সব বালু ব্যবহার করা হয়েছে। এ সব বিষয় নিয়ে জানার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মল্লিক ট্রেডার্স এর সাথে যোগাযোগ করলেও পাওয়া যায়নি। উপজেলা প্রকৌশলী অরুন কুমার দাস আক্ষেপ করে বল্লেন আমি ঠিকাদারকে কতবার বলেছি। তিনি আমার কথা কর্ণপাত করেনি। উপজেলা প্রকৌশলী কি বুঝাতে চেয়েভেন আর আমি জিজ্ঞেস করেছি বালুর গুণগতমানের বিষয়টি
। আর প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় লেয়ার শেষ করার পরে রাস্তা পাকাকরণের জন্য ভিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্ন মানের বা তৃতীয় শ্রেণীর ভিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজ চললেও স্থানীয় লোকজনের বিষয়টা অজানা থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাঁকি দেওয়ার সযোগ পেয়েছে।
স্থানীয় মুরুব্বী সাবেক ইউপি মেম্বার রবি ধন চাকমা প্রতিনিধিকে বলেছেন যে, তিনি নাকি ঠিকাদারকে বলেছেন সরকার কি আপনাদেরকে কম দিয়েছে? আপনারা একটু কম লাভ করেন রাস্তাটি যেন ভালোভাবে করে দেন। কিন্তু কে কার কথা শুনে?
চোরা শুনে না ধর্মের কাহিনী। সরকারের উন্নয়নের অর্থ এ ভাবে অপব্যয় না হলে কিভাবে হবে? চিন্তা করে দেখুন। তাই সঠিক ভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ নির্মাণ সামগ্রী গুণগতমানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।