• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মে, ২০২৪ ইং
ভাঙ্গায় আসামী ধরতে গিয়ে পুলিশের উপরে গ্রামবাসীর হামলা, পুলিশসহ আহত-১১

মোঃ রমজান সিকদার, ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি-০৩/০৩/২০২৪

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় একটি এনজিওর কিস্তির টাকা আদায় করা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকালে প্রথম দফায় গ্রামবাসি এনজিওর কমর্ীদের উপর ও পরের দফায় ঐ দিন সন্ধ্যায় আসামী ধরতে গিয়ে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানার পঁাচ পুলিশসহ ১১ জন আহত হয়েছে। ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের সুয়াদি গ্রামে শনিবার (২ মার্চ) দুই দফা হামলার ঘটনা গ্রামবাসী ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ১১টার দিকে এনজিও কর্মীদের উপর ও রাত ৮টার দিকে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। আহত ৫ পুলিশ সদস্য শনিবার রাতেই ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরা হলেন ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলাম, কনস্টেবল মো. মোরাদ হোসেন, মো. জাহিদ, মো. ফারুক। এনজিও পল্লী প্রগতি সহায়ক সমিতি আহতরা হলো, ভাঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপক আকতার হোসেন, ফিল্ড অফিসার আবুল হাসান, দিপংকর ভদ্র, নিমাই কির্তনীয়া, ইয়াছিন মোল্লা, মিজানুর রহমান (৩৫)। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ফিল্ড অফিসার আবুল হাসান ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে।
পল্লী প্রগতি সহায়ক সমিতির ভাঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপক মো. আকতার হোসেন বলেন, সুয়াদি গ্রামের তারা মিয়া নামক এক ব্যক্তি আমাদের এনজিও থেকে ২০২১ সালে ৪৫ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে। দীর্ঘদিন তিনি কিস্তি দিচ্ছিলেন না। বকেয়া টাকা ঋণ আদায়ে আমাদের এনজিওর আরও ৫ সহকমর্ীকে নিয়ে শনিবার ১০টার দিকে তারা মিয়ার বাড়িতে যাই। এ সময় তারা মিয়া বাড়িতে ছিলেন না। তারা মিয়া বাড়িতে না থাকায় তার মোবাইলে যোগাযোগ করি। এ সময় মোবাইলে কিস্তির পাওনা টাকা চাওয়ায় অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ শুরু করেন তারা মিয়া। একপর্যায়ে আমি ফোন কেটে দিয়ে অফিসের সবাইকে নিয়ে তারা মিয়ার বাড়ি থেকে ভাঙ্গা অফিসের উদ্দেশে রওনা হই। পথিমধ্যে তারা মিয়ার বাড়ি থেকে আনুমানিক আধা কিলোমিটার দূরে তারা মিয়াসহ তার সহযোগী প্রায় ১৫-১৬ জন অজ্ঞাত যুবক আমাদের উপর লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় এলোপাতাড়ি মারপিট করে আমাদের কাছ থেকে প্রায় এক লক্ষ ৮৯ হাজার ৮ শত টাকা ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন এসে আমাদের ৬ জনকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ ভাঙ্গা থানায় দায়ের করি।
ভাঙ্গা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় অভিযোগের তদন্ত করতে যায় ভাঙ্গা থানা পুলিশ। এ সময় তারা মিয়া পুলিশ দেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে ধরে থানায় আনার চেষ্টা করে। এ দেখে তারা মিয়ার স্ত্রী কনি বেগম হঠাৎ মাটিতে শুয়ে পড়ে। কনি বেগম স্ট্রোকে মারা গেছেনÑ এমন তথ্য গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ সময় ৫ পুলিশ আহত হয়। পুলিশের উপর হামলার খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহত ৫ পুলিশকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে ভাঙ্গা থানার ২জন এসআই ও ৩ জন কনস্টেবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া এনজিওর পঁাচজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে এক মাঠকর্মী ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
ভাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদ্যুত কুমার সরকার বলেন, কিস্তির টাকা আদায় করতে গিয়ে এনজিওর লোকজন হামলার শিকার হয়Ñ এমন অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে সুয়াদি গ্রামের কিছু লোক আমাদের পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ সময় ৫ পুলিশ আহত হয়। হামলার খবর পেয়ে আমরা আরও পুলিশ নিয়ে ঐ গ্রামে যাই। এর পর আক্রমণকারীরা পিছু হটে। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।