মোঃ আমিনুল ইসলাম ফরিদপুরের মধুখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় দুই বছর পর স্বামীর সংসারে ফিরে গেলেন ফেরদৌসি নামের এক গৃহবধূ।ফেরদৌসী স্বামীর ঘরে ফিরতে পেরে খুশি । আর মিরাজও স্ত্রীকে ফিরে পেয়ে খুশি। মধুখালি থানার ওসির এমন মহতি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে সকলে।
২০১৭ সালের ৮ মার্চ জেলার মধুখালী উপজেলার ছকড়িকান্দি গ্রামের মো. হোসেন শেখের ছেলে মো. মিরাজ শেখের (২৮) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের মো. হান্নান বিশ্বাসের মেয়ে ফেরদৌসির (২৪) বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের মাথায় তাদের একটি সন্তান জন্ম নেয়। এরই মাঝে পারিবারিক অশান্তির কারণে দু’জনের মাঝে দূরত্ব বেড়ে যায়। দুইজন আলাদা বসবাস করতে থাকেন। তবে ফেরদৌসি দুই বছর ধরে স্বামীর ঘর ফিরে পেতে আপ্রাণ চেষ্টা চালান। অনেক চেষ্টার পরও যখন ব্যর্থ হন, পরে মধুখালী থানা পুলিশের শরণাপন্ন হন।
মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম দুজনকে এক করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালান। পরে বুধবার ওসির আন্তরিক প্রচেষ্টায় উপজেলার ছকরিকান্দি গ্রামে স্বামীর ঘরে ফিরে যান গৃহবধূ ফেরদৌসি।
ফেরদৌসী দুই বছর পর স্বামীর সংসার পেয়ে খুব খুশি । তিনি বলেন, স্বামীকে ফিরে পেতে আমি অনেকের কাছে গিয়েছি, সবাই আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু সমাধান করে দিতে পারেননি। উপায়ান্তর না পেয়ে একদিন মধুখালী থানার ওসি স্যারের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করি। ওসি স্যার আমাকে স্বামীর ঘরে ফিরিয়ে দিতে সহায়তা করেন। স্যার আমাকে আশ্বস্ত করেন। পরে স্যার অনেক চেষ্টা করে আমাদের মিল করে দিয়েছেন। আমার সংসার ফিরিয়ে দিয়েছেন। চিরদিন স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।
স্ত্রী ফেরদৌসিকে ফিরে পেয়ে খুশি স্বামী মিরাজ শেখও। , আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। আমাদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। ওসি স্যারের প্রচেষ্টায় আমরা আবার এক হতে পেরেছি। স্যারকে অনেক ধন্যবাদ, আমি ভুল করেছিলাম, স্যার আমাকে না বুঝালে আমি আমার ভুল বুঝতে পারতাম না। স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে আমি ভালোভাবে সংসার করবো।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এক মাস আগে থানায় এসে ফেরদৌসি তার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য আমাকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করে। সে তখন কান্নাকাটি করে। তার কান্নাকাটি দেখে আমি তাকে আশ্বস্ত করি। পরে তার স্বামী মিরাজ শেখের পরিবার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলোচনা করে একপর্যায়ে সবাই একমত হই।
ওসি আরও বলেন, ওদের দুই বছরের একটি সন্তান রয়েছে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখে ওদের দুইজনকে এক করতে আমি পদক্ষেপ নিই। বুধবার ফেরদৌসি ও মিরাজ এবং তাদের দুই পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে তাদের দুইজনকে মিল করে দিয়েছি। তারা দু’জন কথা দিয়েছে একসঙ্গে মিলেমিশে সংসার করবে।