ফরিদপুরের প্রবীণ সাংবাদিক আ.জ.ম. আমীর আলী। ফরিদপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের অন্যতম একজন।
১৯৬৭ সালে তিনি ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। জানা মতে, তিনি চারবার এ পদে দ্বায়িত্ব পালন করেন।
ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থারও সম্পাদক ছিলেন।
তিনি বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারের সাংবাদিক ছিলেন। সাপ্তাহিক একাল নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকাও বের করেছিলেন তাঁর সম্পাদনায়।
ফরিদপুর প্রেসক্লাবের একটি স্থায়ী ঠিকানা গড়ে তুলতে প্রবীণদের মধ্যে তিনি অন্যতম একজন ছিলেন।
একজন বন্ধুবৎসল মানুষ ছিলেন তিনি। সাংবাদিকরা যা হয় তেমনি আড্ডাবাজ ছিলেন। জীবনের শেষভাগে আমি তাঁকে পেয়েছি অগ্রজ সহকর্মী হিসেবে। সুন্দর সময় কেটেছে তাঁর সাথে অনেক। অনবরত সিগারেট টানতেন। প্রেসক্লাবে এলেই সিগারেটের প্যাকেট আনাতেন। আমরা তার এই সিগারেট টানার প্রসঙ্গে অনেকসময় হাস্যরসও করতাম তাঁর সাথে। তিনিও সন্তানতূল্য হলেও আমাদের এসব হাস্যরসের প্রশ্রয় দিতেন।
জীবনের শেষ ভাগে দীর্ঘদিন অসুস্থ্য ছিলেন বলে প্রেসক্লাবে আসতে পারতেন না। আমার আব্বার পূর্ব পরিচিত ছিলেন বিধায় সন্তানতূল্য স্নেহ করতেন। তাঁর নিকট হতে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের পুরনো গল্প শুনতাম। তাদের আমলে জেলা শহরের সাংবাদিকগণ কি দুর্দান্ত প্রতাপ নিয়ে চলতেন সেইসব স্বর্ণালি দিনের গল্প বলতেন। এই গল্পে উঠে আসতো ফরিদপুরের কিংবদন্তি সাংবাদিক লিয়াকত হোসেন সহ অন্যান্যদের নাম।
তাঁর মুখে শুনতাম ফরিদপুর প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু ও মাওলানা ভাষানির আগমনের ইতিহাস। দেশ স্বাধীনের আগে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুকে আসার নিমন্ত্রণ জানালে তিনি ‘আমার সোনার বাংলা’ এই জাতীয় সংগীত শোনানোর শর্তে রাজি হয়েছিলেন, এ তথ্যও তিনিই জানিয়েছিলেন।
সম্প্রতি ফরিদপুর প্রেসক্লাবের আরেক সিনিয়র সদস্য সাংবাদিক আহম্মদ ফিরোজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আজ আমীর আলী চাচা ছেড়ে গেলেন আমাদের। একদিন আমিও থাকবোনা। দয়াময় আল্লাহ্ প্রয়াত এই মুরুব্বিদের ক্ষমা করে দিন এই কামনা করছি।
হারুন আনসারী রুদ্র – সাংবাদিক ও কলামিস্ট
( ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)