মোঃ মঈন উদ্দীন চিশতী, দিনাজপুরঃ
পাবনার মেধাবী শিক্ষার্থী মোছা. জান্নাতুম মৌমিতা মুন্নীর মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ দিনাজপুর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম।
মুন্নী ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী, সে পোড়াডাঙ্গা হাজী এজেম আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ছোট থেকেই তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি অধিকাংশ সময়ই লেখাপড়ার পিছনে ব্যয় করেছেন।
‘মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত মুন্নীর’ এই শিরোনামে বিভিন্ন সংবাদপত্র ও অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি দেখার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ দিনাজপুর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম তার সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর প্রাথমিক ফোন আলাপের পর মুন্নীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে মুন্নী এবং তার পরিবারের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন হুইপ ইকবালুর রহিম। তখন ওই ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন মুন্নীর বাবা, মা ও চাচা। দীর্ঘ আলাপের পরে হুইপ তাদের আশ্বস্ত করেন মুন্নীর মেডিকেল কলেজে ভর্তিসহ সমস্ত বিষয় নিয়ে। মুন্নীর পরিবার আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়লে হুইপ ইকবালুর মেয়েকে নিয়ে কোনো ধরনের দুশ্চিন্তা না করা জন্য বলেন।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী মুন্নী বলেন, আমার পরিবার যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটি আমার সিদ্ধান্ত। আমি আমার বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।
মুন্নীর বাবা বাকী বিল্লার বলেন, ‘এখন আমি চিন্তামুক্ত। সংবাদ প্রকাশের পরে অনেকেই আমার মেয়ের শিক্ষার জন্য এগিয়ে এসেছেন। তবে যেখানে আমার মেয়ে চান্স পাইছে সেই মালিক হুইপ সাহেব আমাক ফোন দিয়েছিলেন। তার সঙ্গে কথা বলিছি, আমরা সবাই। তিনি আমার মেয়ের সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা তার অধীনেই ওই মেডিকেল কলেজে ভর্তি করার জন্য মনস্থির করেছি।
এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন মুন্নীর সম্পর্কে প্রতিবেশি চাচা মো. জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, এই সংবাদটি যে এভাবে আমাদের মেয়েকে সহযোগিতার জন্য সাড়া ফেলবে আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। গণমাধ্যমকর্মীদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানায় আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলার চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, আমরা সকলে মিলে মুন্নীর পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসেছিলাম। সবার সিদ্ধান্তে মুন্নীকে ওই মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। আর তার ভর্তিসহ সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছেন ওই মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। আমরা গ্রামবাসী ও পরিবার তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত সংসদ সদস্য এম আব্দুল রহিম মেডিক্যাল কলেজ আমার প্রয়াত বাবার নামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নামকরণ করেছেন। আমি সংসদের যে ভাতা পাই সেই অর্থ দিয়ে প্রতি বছরই মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাহায্যে ব্যয় করে থাকি। বর্তমানে আমাদের এই মেডিক্যাল কলেজে ৫ জন শিক্ষার্থী বিনাখরচে পড়াশোনা করছেন। ইতোমধ্যে ১৪ জন এমবিএস পাস করেছেন। সংবাদটি দেখার পরে আমি ওই অদম্য শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের চিন্তামুক্ত করেছি। তার মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষা গ্রহনের জন্য যে অর্থ ব্যয় হবে সেটা আমি বহন করবো। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে আর প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় আমরা সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে চাই।