দফায় দফায় ভারি বর্ষণ, বন্যার পানি বৃদ্ধি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে রাজশাহীর বাগমারায় নি¤œাঞ্চলের প্রায় দশ হাজার বিঘা জমির রোপা, আমন ও আউশ ধানসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া পানির প্রবল চাপে বিলসুতি বিলের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে অর্ধ কোটি টাকার চাষকৃত মাছ ভেসে গেছে।
জানা যায়, অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ভরে যায় উপজেলার সব নদী-নালা ও খাল-বিল। সেই সাথে কয়েক দিন আগে মান্দায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় বাগমারার বারানই ও ফর্কিন্নী নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থায় নরদাশ, সোনাডাঙ্গা, গোবিন্দপাড়া, বাসুপাড়া, দ্বীপপুর, বড়বিহানালী ও গনিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং নি¤œাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। এতে প্রায় দশ হাজার বিঘা জমির রোপা, আমন ও আউশ ধানসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। এছাড়া পানির প্রবল চাপে বড়বিহানালী ইউনিয়নের বিলসুতি বিলের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে ওই এলাকাও বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি ও দফায় দফায় ভারি বর্ষণে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই বিলের চাষকৃত মাছ ভেসে গেছে। এতে মৎস্য চাষীরাদের প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে বিলসুতি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: এর সভাপতি অমূল্য চন্দ্র দাবি করেন।
এদিকে গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের জিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আয়ূব আলী জানান, এবার তিনি ১০ বিঘা জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছিলেন। কিন্ত প্রবল বর্ষণে বিলের নিচু এলাকার আউশক্ষেতে পানি জমে গেছে। এতে তার প্রায় ৪ বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। গনিপুর ইউনিয়নের মোহম্মাদপুর গ্রামের কৃষক মহসিন আলী জানান, একটানা বর্ষণে জলাবদ্ধতায় তার ক্ষেতের মরিচ গাছ লাল আকার ধারন করে মরে যাচ্ছে। একই ইউনিয়নের মহববতপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম, লাউপাড়া গ্রামের তৈয়ব আলী, দুলাল হোসেন, ইউনুছ আলী, মাঝিগ্রামের আলতাফ হোসেন ও আনিছার রহমান বলেন, নি¤œচাপ, প্রবল বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে আমাদের পান বরজগুলো মাটির সাথে মিশে গেছে। এতে ওই সব পানচাষীদের ব্যাপক টাকার ক্ষতি হয়েছে। মাড়িয়া ইউনিয়নের দাশপাড়া গ্রামের কৃষক মাজেদুর রহমান বলেন, খেতে পানি জমে আমার দুই বিঘা জমির মরিচ, বেগুন, শসা ও ঢেঁড়শ ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্তকর্তা রাজিবুর রহমান বলেন, চলতি মওসুমে বাগমারা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌর এলাকায় ৪০ হাজার ১শ’ ৯৪ বিঘা জমিতে আউশধান, পানবরজ, মরিচ, বেগুন, মূলা, শসা, ঢেঁড়শ ও পটলসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ চাষ হয়েছিলো। এর মধ্যে প্রবল বর্ষণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় দশ হাজার বিঘা জমির ফসল তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে এ উপজেলায় কৃষি খাতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।