• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মে, ২০২৪ ইং
রাজশাহীতে গরুর হাটে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল রাজশাহী
কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই চলছ কেনাবেচা।  রোববার রাজশাহী সিটি হাটে। রাজশাহীর সিটি হাটে কোরবানির পশু কেনাবেচা শুরুর প্রথম দিনে গত (বুধবার) প্রবেশমুখে জীবাণুনাশক ছিটানোর জন্য জনা দশেক লোক ছিল। কেউ গরু নিয়ে হাটে ঢুকতে গেলেই তাঁরা হাতে-পায়ে স্প্রে করছিলেন। এমনকি গাড়িতে, গরুর গায়েও জীবণুনাশক ছিটানো হচ্ছিল। গতকাল রোববার গিয়ে তাঁদের কাউকেই দেখা গেল না। একটি হ্যান্ডমাইকে শুধু একজন বলছেন, ‘সবাই মাস্ক পরুন’। তাঁর কথা হাটের হাজারও মানুষের হট্টগোলে হারিয়ে যাচ্ছে।হাটের ভেতরে গিয়ে দেখা গেল স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই। গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে চলছে পশু কেনাবেচা। কারও মুখে মাস্ক আছে, কারও মুখে নেই। কারও মুখে থাকলেও নামিয়ে রাখা হয়েছে।
হাটে প্রচুর গরু-মহিষ উঠেছে। সবই দেশি। ক্রেতা বলছেন দাম তুলনামূলক বেশি, খামারি বলছেন কম। স্থানীয় ক্রেতা ছাড়াও এসেছেন দেশের দূরদূরান্তের ব্যাপারীরাও। বেশির ভাগ গরু ভটভটিতে করে আনা হয়েছে। এই যানবাহনের চাপে হাটের দুই পাশের রাস্তায় যানজট লেগে গেছে। খামারি আর ব্যবসায়ীরা হুড়োহুড়ি করে হাটে গরু-মহিষ ঢোকানোর চেষ্টা করছেন। এ জন্য হাটে ঢুকতে গেলে ভিড় ঠেলতেই হচ্ছে।রাজশাহী সিটি হাট সপ্তাহের রবি ও বুধবার বসে। কোরবানি উপলক্ষে রোববার থেকে প্রতিদিন বসবে। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হঠাৎ বৃষ্টি নামল। ছোট ছোট টিনের চালার মধ্যে অনেকে হুড়োহুড়ি করে ঢুকলেন। ভেতরে ঢোকার মতো কোনো জায়গা না পেয়ে কেউ কেউ গরু ধরে দাঁড়িয়ে থেকেই ভিজলেন। একটু পর বৃষ্টি থামলে কেনাবেচা জমল, কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার বৃষ্টি। আবার লোকজন হুড়োহুড়ি শুরু করলেন। এর মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মানার যে ঘোষণা সরকার থেকে দেওয়া হয়েছে, তা সবাই যেন ভুলে গেলেন। গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন সবাই। গরু কেনাবেচার সময়ও একই অবস্থা। দেখা গেল, এই হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে করোনাভীতি বা সামাজিক দূরত্ব মানার কোনো চিন্তাই নেই।ফেনী থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান। তিনি পাঁচটি গরু কিনেছেন। তিনি মুখের মাস্ক নামিয়ে রেখেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মাস্ক মুখে দিয়ে কথা বলা যায় না। দরদাম করতে হয়। করোনা হলে এমনি হবে। মাস্ক কোনো ব্যাপার না।
সোনারগাঁ থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী হোসেন আলী। তিনি তিনটি গরু কিনেছেন। মাস্ক মুখ থেকে নামিয়ে রাখা প্রসঙ্গে তিনি বললেন, হাটে ঢুকলেই নতুন মাস্ক পুরোনো হয়ে যায়। এরপরে মাস্ক মুখে থাকা আর না থাকা সমান কথা। তাই নামিয়ে রেখেছেন।হাটে প্রচুর গরু-মহিষ উঠেছে। সবই দেশি। স্থানীয় ক্রেতা ছাড়াও এসেছেন দেশের দূরদূরান্তের ব্যাপারীরাও।গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ি থেকে খামারি তরিকুল ইসলাম একটি গরু এনেছিলেন। বিক্রি করেছেন ৮০ হাজার টাকায়। তিনি ছয়টি গরু পুষেছেন। বললেন, প্রতি হাটেই একটি করে নিয়ে আসবেন। তাঁর মুখে মাস্ক ছিল না। প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি কথা ঘোরালেন। মাস্ক না পরার কোনো সদুত্তর দিলেন না।বগুড়া থেকে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জাহিদ আটটি গরু নিয়ে এসেছেন। তাঁর একট গরুর দাম হাঁকছেন সাত লাখ টাকা। তাঁর ভাষায়, লকডাউনের কারণে বাজারে ক্রেতা কম। বাজার ভালো না। তাঁর মুখের মাস্কটিও নিচে নামি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী আজিবুর রহমান। তিনি তিনটি গরু নিয়ে এসেছেন। তিনিও বলছেন, হাট ভালো হচ্ছে না। লকডাউনের কারণেই গত বছরের মতো এবারও ক্রেতা কম। তাঁরও মুখের মাস্কটি তিনি নিচে নামিয়ে রেখেছেন।রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন এই হাটটি কয়েকজন ব্যবসায়ী মিলে ইজারা নিয়ে চালান। এঁদের একজন হচ্ছেন নগরের বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান ওরফে কালু। তিনি বলেন, তাঁরা হাটে স্যানিটাইজার, মাস্ক রেখেছেন। যাঁর ইচ্ছা নিতে পারছেন। পশুর হাটে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব নয় স্বীকার করে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য কাল (সোমবার) পুলিশ তাঁদের ডেকেছে। তাঁরা যাবেন। সেখানেই এ বিষয়ে আলোচনা হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।