• ঢাকা
  • রবিবার, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই মে, ২০২৪ ইং
ফরিদপুরে বর্ষার ১ম সপ্তাহে দেখা মিললো চালতে ফুলের

সনতচক্রবর্ত্তী:ফরিদপুরে বর্ষার আগমনে কদম-কেয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফুটতে শুরু করে চালতার ফুল। এ ফুল সাদা রঙের। সুরভিত এই ফুলের ব্যাস ১৫ থেকে ১৮ সেন্টিমিটার। ফুলে পাঁচটি থেকে ছয়টি মোটা পাপড়ি থাকে; বৃতিগুলো পাপড়িকে ঘিরে রাখে।

একটি চালতা ফলের গাছে বছরে একবারই ফল ধরে। প্রতিটি চালতা ফল স্বাভাবিকভাবে ২৫০ থেকে প্রায় ৫০০ গ্রাম ওজন হয়ে থাকে। চালতা গাছে প্রথমে ফল ধরে।

ফলের আকার যখন ডিমের আকৃতি ধারন করে তখন ওই ফলের মধ্য থেকে অপরূপ, বাহারী, বিরল ধরনের ফুল ফোটে। চালতার ফুল সাধারণত রাতে ফোটে ।

চালতা গাছে ফুল ফোটার পর একদিনের মধ্যেই ফুলের পাপড়ি নিস্তেজ হয়ে ঝড়ে পড়ে। একটি ফলে একদিনের জন্যই পরিপূর্ণ একটি ফুল ফুটে ঝড়ে যায়।

চালতার ফুল ফোটার পর মধু সংগ্রহের জন্য মৌমাছির আনাগোনা ঘটে। মৌমাছিরা চালতার ফুল থেকে মধু আহরণ করতে গিয়ে একফুল থেকে অন্য ফুলে বসে।

এভাবেই চালতার পরাগায়ন ঘটে ফুলটি ফলে পরিণত হয়ে থাকে।অতীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিষ্ময়কর ও বহুবিধ ঔষধি গুনসম্পন্ন ওই চালতা ফুল ও ফল দেখা গেলেও বর্তমানে ওই ফুল ও ফল ক্রমেই গ্রাম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

আমাদের পরিচিত টক স্বাদের চালতা ফল আসে এ ফুল থেকে। চালতা এবং এর আচার সবার কাছেই বেশ পরিচিত। তবে গুণের দিক থেকে চালতা মোটেই হেলা করার মতো নয়।

গাছ উচ্চতায় প্রায় ২০ মিটার পর্যন্ত হয়। শাখা-প্রশাখা অবিন্যস্ত ও প্রসারিত। সবুজ পাতা খাঁজকাটা ধরনের। সবুজের মাঝে শুভ্র চালতা ফুল বেশ আকর্ষণীয়। দীর্ঘাকার ঘন পাতার আচ্ছাদন এ ফুলকে আড়াল করে রাখে। এর বৃতির রং সবুজ, মাংসল ও স্থায়ী। মিষ্টি সুগন্ধি এ ফুলের পরাগধানী কাঁচাহলুদ রঙের পরাগকেশর মণ্ডিত। বৃতির সবুজ, দলের শুভ্রতা, পরাগের হলুদ এবং তারকাবৃতির গর্ভমুণ্ড এ ফুলকে দিয়েছে বাড়তি সৌন্দর্যময়তা। হয়তো ফুলের সৌন্দর্যময়তাই এই বৃক্ষকে দিয়েছে রূপসী গাছের মর্যাদা!

বৃতিগুলো দ্রুত ফলে পরিণত হয় বলে চালতা ফুল দু-এক দিনের বেশি স্থায়ী হয় না। প্রভাতে পাপড়ি মেলে আর সন্ধ্যায় ঝরে। বেলা বাড়ার সঙ্গে রঙে পরিবর্তন আসে। নিষিক্ত ফুলই চালতা ফলে পরিণত হয়।

রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ এ ফুলের রূপে মুগ্ধ হয়ে লিখেছিলেন—আমি চলে যাব বলে- চালতা ফুল কি আর ভিজিবে না?
শিশিরের জলে…
এই ফুল সম্পর্কে নিসর্গী দ্বিজেন শর্মা লিখেছেন, চালতার ফুল যেকোনো সুন্দর ফুলের সঙ্গেই তুলনীয়। গাছের উচ্চতা প্রায় ২০ মিটার। শাখা-প্রশাখা এলোমেলো। ছায়াঘন ও প্রসারিত। পাতার শিরাবিন্যাস তীক্ষ্ণ ও খাজকাটা। পাতার এই আকৃতির কারণে চালতাকে রূপসী গাছ বলা হয়।
এই রকম চালতে ফুল বা গাছ নিয়ে অনেক কবি সাহিত্যিক বিভিন্ন সময় গান বা কবিতা লিখেছেন।

বোয়ালমারীর বিশিষ্ট সাংবাদিক কামরুল শিকদার আমাদের সময় ডটকমকে বলেন,ফরিদপুরে বিভিন্ন এলাকায় চালতে গাছ দেখা যায়। চালতা ফল হিসেবেই আমাদের কাছে বেশি পরিচিত হলেও ফুলের সৌন্দর্য কম নয়। চালতার ফল, বাকল ও পাতায় ভেষজ গুণাগুণ বিদ্যমান। এই ফল থেকে সুস্বাদু আচার বানানো হয়। চালতা সবজি হিসেবে বেশ সমাদৃত, ডালের সঙ্গে আর মাছের সঙ্গে। বীজের মাধ্যমে চালতার গাছ হয়।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।