ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ফুরশা ৯ নং ওয়ার্ডের চৌরঙ্গী বাজারে আজ সকাল ১১ টায় ব্যবসায়ীদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভ্রাম্যমান দোকানে প্যান্ট বিক্রয় করা নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয় যা পরবর্তীতে পুর্ব থেকেই ওৎ পেতে থাকা আফজাল শেখ ও তার দলবল দেশীয় অস্ত্র ঢাল, শরকী, দা, চাপাটি ইত্যাদি নিয়ে দোকানদার আলতাফ ফকিরকে মারধোর করে এবং তার পালসার মটর সাইকেলটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় যা ব্যবহারের একেবারেই অনুপোযোগী।
এসময় বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক, পল্লী চিকিৎসক ওয়াহিদুল ইসলাম খান বাকা ও অন্যান্যরা বাধা দিতে এলে হামলাকারীরা তাদের উপরও হামলা চালায় এবং ওয়াহিদুল ইসলাম বাকাকে মেরে আহত করে তার ঔষধের দোকান ভাংচুর করে নগদ ৩ লক্ষ টাকা, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এর ৫ লক্ষ টাকার ২ টি চেক ও প্রায় ২ লক্ষ টাকার ঔষধ ধ্বংস করে দেয় এবং অপর ব্যবসায়ী আবেদ মাতুব্বরের ভুসি মালের দোকানে হামলা করে তাকে আহত করে দোকানের জিনিসপত্র ভেঙে নগদ ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় এসময় হামলাকারীরা বাজারের পাশে আবেদ মাতুব্বরের মুরগীর ফার্মটি ভেঙে ১০০ থেকে ১৫০ মুরগী হত্যা করে। আবেদ মাতুব্বরের ২ থেকে ২.৫ লক্ষ টাকার পন্যের ক্ষতি হয়।
আহত ওয়াহিদুল ইসলাম খান বাকা বলেন, একটা প্যান্ট এর দোকানে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে তর্কাতর্কি থেকে এ ঘটনার সুত্রপাত। আমরা ঠেকেতে গেলে আফজাল শেখ, লিয়াকত মোল্লা, জাহাঙ্গীর মোল্লা, দুলাল মোল্লা, রাজ্জাক খান, লাভালুক শেখ, ওয়াজেদ মোল্লা, রাজা মোল্লা, সিরাজ শেখসহ তারা সদলবলে ঢাল, শরকী, দা, চাপাটি নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায় এবং দোকান পাট সহ আমারদের বাড়িঘরও ভাংচুর করে ও আমার দোকান থেকে নগদ ৩ লক্ষ টাকা, ৫ লক্ষ টাকার দুটি চেক, প্রায় দুই লক্ষ টাকার ঔষধ নিয়ে যায় আর আবেদ মাতুব্বরের দোকানে হামলা চালিয়ে নগদ ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং তার মুরগীর ফার্মে থাকা মুরগী হত্যা করে ও দোকানের মালামালের ব্যপক ক্ষতি করে। তাছাড়া আমি সহ আবেদ মাতুবব্বর, আশিক ফকির, আলতাফ ফকির, কাজল ও তার পিতা গোলাম রব্বানীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আমরা এর উপযুক্ত বিচার চাই।
এ বিষয়ে হামলাকারীদের প্রধান আফজাল শেখের সাথে সরাসরি কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন এবং ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন আপনারা এসে ভাংচুর দেখছেন এখন চলে যান আর যা ইচ্ছা হয় লিখেন এখানে বেশী ভীড় করলে আবার মারামারি লাগবে তাতে আপনারা দায়ী হবেন। এসময় তিনি পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনেই বিভিন্নজনকে হুমকি ধামকি দিচ্ছিল। তার এত ক্ষমতার উৎস কোথায় তা আসলে বোধগম্য নয়।
কানাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলায়েত ফকিরকে এ বিষয়ে মুঠোফনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ঘটনা জানতে পেরে আমি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক মোল্লা, কোতোয়ালি থানার ওসি মোরশেদ আলম ঘটনাস্থান পরিদর্শন করি। এলাকায় খুবই ন্যক্কারজনক একটি ঘটনা ঘটেছে। সিয়াম সাধনার মাসে এরা কিভাবে এসব কাজ করতে পারে তা আসলে আমাদের বোধগম্য নয়। আমি প্রশাসনকে বলেছি যারা প্রকৃত দোষী তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। অন্যায় করে কেউ যেন পার না পায়।