“স্যার লটকন খাবেন, লটকন”?
এরাই আমার বাংলাদেশ…
নতুন আসা মানুষগুলোর চলাচল রুমের ভেতর থেকেই বেশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলাম। তারা নিয়ম নীতি কমই মানেন বলে মনে হলো। কেউ গামছা পড়েই
ঘোরাফেরা করছেন। কারো মাস্ক আছে, কারো নেই। এরপরও খুব সাবলিল ভঙ্গিমায় চলাফেরা। হঠাৎ করে একজন এসে বললেন,”স্যার, আদা খাবেন, আদা। লেবুও আছে স্যার”।
আমি অবাক হয়ে বললাম, এতকিছু থাকতে আদা-লেবু কেন? তার জবাব, “স্যার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সাহায্য করে”। আমি খুব অবাক হলাম। মাস্ক পড়ছেন না; সোশ্যাল ডিসটেন্সিং নাই;কিন্তু আদা এবং লেবু নিয়ে ব্যস্ত। একজন এসে বললেন, “স্যার লটকন আছে, এটাও সাহায্য করে”। নতুন কিছু শিখে ফেললাম। এরমধ্যে রহিম ভাই নামে একজন আছেন,
উনা্কে জিজ্ঞেস করলাম, মাস্ক কোথায়? উনি বলে ফেললেন, “মাস্ক প্লেনে চাইছিলাম, দেয় নাই। এয়ারপোর্টে চাইছিলাম, দেয় নাই। এখনো আমার কাছে নাই”। আবারো অবাক হলাম।
মানুষগুলো বেসিক যে প্রয়োজনীয়তা সেগুলো উপলব্ধি করছেন না। তার বদলে লেবু, আদা, লটকন সবাই আছে। তাই তারাহুড়া করে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের মাধ্যমে শ’ দুয়েক
মাস্ক আনিয়ে নিলাম। দেশের মানুষকে বিনামূল্যে দেয়ার জন্যে এগুলো আগেই কিনে রেখেছিলাম। আজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই দুই’শ মাস্ক নতুন যাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করলাম।
সাথে সেটাও জানিয়ে দিলাম, সামাজিক দূরত্ব কি এবং কিভাবে তাদেরকে সেগুলো মেনে চলতে হবে। তারাও খুশি। এরমধ্যে এসে গেলো কেটে আনা ফ্রেশ কাঁচা আম। লবন দিয়ে
খাওয়ার জন্য। ধন্যবাদ বেলার। ধন্যবাদ নতুন যাত্রীদেরকে। সবাই সুস্থ্য থাকুন।
## ডাঃ ফেরদৌস খন্দকারের ফেইসবুক থেকে সংগৃহিত।।