বিশ্ব জুড়ে করোনা আতঙ্কের মধ্যে এবার উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে জল্পনা শুরু
হলো। সম্প্রতি হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছে তার। তারপর থেকেই তিনি গুরুতর অসুস্থ বলে জানা গেছে। সঙ্কটজনক অবস্থায় চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন কিম। সেখানে প্রিয়জনরা তার সঙ্গে রয়েছেন বলে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া সংক্রান্ত খবরের পোর্টাল ডেইলি একে। যদিও পিয়ংইয়ংয়ের তরফে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ওই খবরের পোর্টালটি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে কাজ করলেও তাদের রিপোর্ট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে সিউল। প্রেসিডেন্টের বাসভবন ব্লু হাউসের দুটি সূত্র জানিয়েছে, অস্ত্রোপচার হলেও কিমের অবস্থা সঙ্কটজনক নয়।
চলতি মাসের মাঝামাঝি দাদা কিম ইল সাঙের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি কিম জং উনকে। এমনকি দাদার জন্মদিন উপলক্ষে পিয়ংইয়ং থেকে স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হলেও, ধারে-কাছে দেখা যায়নি তাকে। তার অনুপস্থিতির কারণ নিয়ে তখন থেকেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল। সম্প্রতি তাতে সিলমোহর দেয় ডেইলি এনকে-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন। কিছু বিশেষ সূত্রকে উদ্ধৃত করে তারা জানায়, অত্যধিক ধূমপান, স্থূলতা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই সমস্যায় ছিলেন কিম। তার ওপর মাত্রাতিরিক্ত কাজের চাপ। তার জেরে সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। গত ১২ এপ্রিল হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয় তার। সেই থেকে সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি কিম।
এ মুহূর্তে উত্তর পিয়ংইয়ংয়ের হিয়াংসান কাউন্টির মাউন্ট কুমগাং রিসোর্টে কিম চিকিৎসাধীন বলেও দাবি করা হয় ওই রিপোর্টে। বলা হয়, অস্ত্রোপচারের পর ১৯ এপ্রিল চিকিৎসকদের একটি দল পিয়ংইয়ং ফিরে যায়। অন্য একটি দল রয়ে যায় রিসোর্টেই। ৩৬ বছর বয়সি কিম তাদের পর্যবেক্ষণেই রয়েছেন। রিসোর্টে কিমের সঙ্গে রয়েছেন তার ৩০ জন ব্যক্তিগত দেহরক্ষী ও পরিবারের সদস্যরা।
তবে এ ব্যাপারে তাদের কিছু জানা নেই বলে সিউলের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিমের অসুস্থতা নিয়ে পিয়ংইয়ং থেকে সেরকম কোনো ইঙ্গিত পাননি বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মুন জে ইনের মুখপাত্র ক্যাং মিন সুক। ওই রিপোর্টের সত্যতা নিয়ে সন্দেহও প্রকাশ করেন তিনি। ডেইলি এনকের ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ইতোমধ্যেই কিম জং উনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে বলে জানা গেছে।
দীর্ঘদিন জনসমক্ষে হাজির না হওয়ায় এর আগেও কিম জং উনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে নানা গুজব সামনে এসেছিল। কিন্তু তার দাদা কিম ইল সাঙ এবং বাবা কিম জং ইল দুজনেরই মৃত্যু হয় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। তাই কিমের শারীরিক অবস্থা নিয়ে জল্পনা আরও জোর পেয়েছে।