করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে শুধু মানুষকে আক্রান্ত করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না। ক্রমাগত ঘরবন্দি রেখে মানুষকে ফেলতে যাচ্ছে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি)। সংস্থাটি বলছে, বিশ্ব ক্ষুধার মহামারিতে পড়তে যাচ্ছে এ বছর। কারণ অন্যবছরের তুলনায় ২০২০ সালে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হবে। আর এ তালিকায় শীর্ষে আছে বিশ্বের ৫ দেশ।
সংস্থার হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বে মারাত্বক খাদ্য সংকটে ছিলো ১৩ কোটি ৫০ লাখ মানুষ। যেহেতু এখন অনেক দেশেই কল কারখানা বন্ধ করে মানুষ বাধ্যতামুলক কোয়ারেন্টিন মেনে চলছে, সে কারণে এ বছর ক্ষুধার্ত মানুষের এ সংখ্যা বেড়ে হবে ২৬ কোটি ৫০ লাখ।
খাদ্য ঝুঁকিতে থাকা ৫ দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে ইয়েমেন। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া যুদ্ধের কারণে দেশটি এমনিতেই দুর্ভিক্ষে রয়েছে। তার ওপর নতুন করে দেখা দিয়েছে করোনা মহামারি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ায় করোনা দেশটিতে ব্যাপকভাবে ছেয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। বর্তমানে দেশটিতে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখ। ফলে দেশটির জন্য জরুরিভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন।
দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (ডিআরসি)। ডব্লিউএফপি জানায়, দীর্ঘ এক শতকের এক তৃতীয়াংশ সময় গৃহযুদ্ধে থাকা দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয়বৃহৎ দুর্ভিক্ষ কবলিত দেশ। দেশটির ৩ কোটি মানুষ যুদ্ধের কারণে খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভর করতে হয়।
খাদ্য ঝুঁকিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভেনেজুয়েলা। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মারাত্বক খাদ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বিশ্বের তেল সমৃদ্ধ এ দেশ। ফলে এক তৃতীয়াংশ মানুষের জন্য এখন খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। খাদ্য ঝুঁকিতে চতূর্থ অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ সুদান এবং পঞ্চম স্থানে আফগানিস্তান।
এই দেশগুলো ছাড়াও বিশ্বের আরও কিছু দেশে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে। সবদিক বিবেচনা করে এসব দেশে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে তৎপরতা চালাচ্ছে জাতিসংঘ।