• ঢাকা
  • সোমবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে মে, ২০২৪ ইং

শ্রমিক রাজনীতির সংশপ্তক 

হাসিবুল হাসান লাবলুর  ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

০ বিশেষ প্রতিবেদক ০

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ফরিদপুর জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক,
ফরিদপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান,
জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক
ও ফরিদপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের (১০৫৫)
সভাপতি শ্রমিক জননেতা
বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসিবুল হাসান লাবলুর
১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার।
২০১০ সালের ২৪ জানুয়ারি মাত্র ৫৪ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কবর জেয়ারত, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অকুতোভয় নেতৃত্বের অধিকারী হাসিবুল হাসান লাবলু ছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের একজন নির্ভীক সৈনিক।
তিনি ছিলেন রাজনীতির সংশপ্তক। খেটে খাওয়া মুটে-মজুর ও শ্রমিক-জনতার বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বারবার মিথ্যা মামলায় জীবনের দীর্ঘ সময়  কারাবরণ করেছেন। সামরিক শাসনামলে সত্তর ও আশির দশকে তাকে দফায় দফায় কারাগারে বন্দি থাকতে হয়েছে রাজনৈতিক মামলায়। আবার বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ঈর্ষার শিকার হতে হয়েছে।
রাজনৈতিক  মিথ্যা মামলায় কারা প্রকোষ্টে নিয়ে তার উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালিয়েও তাকে গণমানুষের দাবি আদায়ের সংগ্রামের পথ থেকে হটানো যায়নি। মৃত্যুর পরেও তিনি রয়ে গেছেন কর্মী, সমর্থক, ভক্ত সহ সাধারণ মানুষের হৃদয়ের মাঝে।
১৯৫৬ সালের ১ জুলাই হাসিবুল হাসান লাবলু জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি সরকারি ইয়াছিন কলেজের ছাত্র ছিলেন। ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শহীদ করার পর তিনি তৎকালে সামরিক সরকারের চরম রোষানলে পড়েন। এরপর সামরিক শাসনামলে রাজনৈতিক মামলায় প্রথম গ্রেফতার হন তিনি। দীর্ঘমাস কারাগারে বন্দি থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি অত্রাঞ্চলের অসংগঠিত শ্রমিকদের সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি ফরিদপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন (১০৫৫) এর সভাপতি নির্বাচিত হন। আমৃত্যু তিনি এই পদে ছিলেন। একই সময়ে তিনি ফরিদপুর জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হন।
জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক থাকাকালে ১৯৮৮ সালে তিনি প্রথম ফরিদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের আগেই সামরিক সরকার তাকে গ্রেফতার করে। ওই নির্বাচনে  বিপুল জনপ্রিয়তায় সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হলেও তার বিজয় কেড়ে নেয়া হয়। এরপর ১৯৯১ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই নির্বাচনে ভোটে জিতেও তার বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয় বলে তিনি শহরের ঐতিহাসিক জনতা ব্যাংকের মোড়ে স্মরণকালের এক প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেন। ওই সমাবেশ একপর্যায়ে জনসমুদ্রে রুপ নেয়। ওই সমাবেশে লাবলুর বজ্রকন্ঠের বক্তৃতা শহরবাসী আজও  স্মরণ করেন।
এরপর হাসিবুল হাসান লাবলু জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। ১৯৯৮ সালে তিনি বিপুল জনপ্রিয়তায় ফরিদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে অপারেশন ক্লিন হার্টের সময় তিনি আবারো গ্রেফতার হন। সেসময়ে দীর্ঘ দুই মাস তিনি কারাগারে বন্দি ছিলেন। বরিশাল কারাগারে তার উপর অবর্ণনীয় নির্যাতনের সচিত্র খবর প্রকাশ হয় দেশের জাতীয় পত্রপত্রিকায়।  রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তার পৌর চেয়ারম্যান পদ কেড়ে নেয়া হয় বলে আবারও তিনি অভিযোগ করেন। আমৃত্যু তিনি রাজনীতির ময়দানে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে গেছেন।
বিপুল জনপ্রিয়তার মাঝে ২০০৪ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত তিনি এ পদে ছিলেন।হাসিবুল হাসান লাবলুর মৃত্যু শুধু দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝেই নয়; দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের মাঝে গভীর শোক সৃষ্টি করে।
ফরিদপুরের শ্রমিক জননেতা হিসেবে তিনি কিংবদন্তী  হয়ে আছেন। ১৯৮৪ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের (১০৫৫)  সভাপতি নির্বাচিত হন বারবার। তিনি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল আঞ্চলিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি ছিলেন।ছাত্রাবস্থা থেকে তিনি শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের এক সুনির্দিষ্ট ভিশন নিয়ে রাজনীতিতে নামেন। তাকে শ্রমিক আন্দোলনের সিংহপুরুষ বলা হয়।
হাসিবুল হাসান লাভলুর স্ত্রী ঝর্ণা হাসান বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক। তার বড় ছেলে শরিফুল হাসান প্লাবন প্রথমে ছাত্রলীগ ও বর্তমানে শহর আওয়ামী লীগের সদস্য। ছোট ছেলে আশরাফুল হাসান প্রলয় জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
#কর্মসূচি: শ্রমিক জননেতা হাসিবুল হাসান লাবলুর ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ বিস্তারিত কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। সোমবার সকাল ৯টায় শহরের থানা রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে হাসিবুল হাসান লাবলুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হবে। এরপর তার স্মরণে একমিনিট নীরবতা পালন শেষে দোয়া ও মোনাজাত করা হবে।
সকাল সাড়ে ৯টায় আলিপুর গোরস্থানে তার কবর জিয়ারত করা হবে।
বিকেল চারটায় আলিপুরস্থ সাজেদা কবিরউদ্দিন বিদ্যালয়ে হাসিবুল হাসান লাবলু’র স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন এ সকল কর্মসূচীতে আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থকদের উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।