• ঢাকা
  • শনিবার, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ ইং
আয়া সোফিয়ার বিড়ালটির ভাগ্য কি ঘটতে চলেছে?

কয়েক হাজার মানুষের অংগ্রহণ জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে আবারো মসজিদে ফিরেছে তুরস্কের ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া। ইতিহাসের স্বাক্ষী হতে আয়া সোফিয়ায় নামাজে উপস্থিত ছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান। নামাজের আগে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে কুরআন তেলাওয়াত করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। সুমধুর কণ্ঠে তেলাওয়াত করেন সুরা ফাতেহা এবং সুরা বাকারার কিছু অংশ।

তবে আয়া সোফিয়ায় আছে গ্লি নামের একটি বিড়াল। গ্লি বেশ জনপ্রিয়, নানা কারণে বিখ্যাতও। তবে সম্প্রতি আয়া সোফিয়া মসজিদে রূপান্তরের সিদ্ধান্তের পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যমে উঠে আসে গ্লিয়ের ভবিষ্যত নিয়ে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স তুরস্কের কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানায়, আয়া সোফিয়াতেই থাকবে বিড়ালটি। আয়া সোফিয়া মিউজিয়াম থাকার সময় দর্শনার্থীদের প্রিয় হয়ে উঠে ধূসর রঙের শরীর ও সবুজ জ্বলজ্বলে চোখের গ্লি। ২০০৯ সালে এক সফরে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিড়ালটির সঙ্গে ছবি তোলেন। এরপরে বিখ্যাত হয়ে উঠে গ্লি।

দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেন, গ্লিসহ যেসব বিড়াল এ জায়গাটিতে আছে, তারা এখানেই থাকবে।

তিনি বলেন, এই বিড়ালটি অনেক বিখ্যাত হয়ে গেছে এবং আরো বিড়াল আছে যেগুলো এতটা বিখ্যাত নয়। এই বিড়ালটি তো থাকছেই, অন্য বিড়ালগুলোও আমাদের মসজিদে থাকতে পারবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ জনপ্রিয় গ্লি। তার নামে ইনস্টাগ্রামে আছে একটি অ্যাকাউন্টও। উমুত বাহচেচির নামে এক ব্যক্তি চার বছর ধরে অ্যাকাউন্টটি চালান।

ইনস্টাগ্রামে গ্লির আছে প্রায় ৫০ হাজার ফলোয়ার। অ্যাকাউন্টটিতে বিড়ালটিতে ছবি পোস্ট করা হয়ে থাকে। দর্শনার্থীরাও তাদের তোলা ছবি তোলা ট্যাগ করেন।

৫৩৭ সালে আয়া সোফিয়া নির্মিত হয়। ইস্তাম্বুল বিজয়ের আগ পর্যন্ত ৯১৬ বছর আয়া সোফিয়া গির্জা ছিল। ১৪৫৩ সালের ১ জুন মসজিদে রূপান্তরিত আয়া সোফিয়ায় প্রথমবার জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ১৪৫৩ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বছর মসজিদ ছিল।

১৯৩৪ সালে আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর বানানোর জন্য ডিক্রি জারি করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কামাল আতার্তুকের মন্ত্রিসভা। গেলো বছর এক নির্বাচনী সভায় জাদুঘর থেকে সোফিয়াকে মসজিদে ফেরানোর ঘোষণা দেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। বলেন, আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর বানানো মস্তবড় ভুল ছিল। প্রেসিডেন্টের ঘোষণার বিরোধিতা করে আদালতে মামলা ঠুকে দেয় একটি বেসরকারি সংস্থা।

শুনানি শেষে ১০ জুলাই তুরস্কের আদালত মামলা খারিজের পাশাপাশি আতার্তুক সরকারের সেই ডিক্রি বাতিল করেন। রায় দেন মসজিদে ফিরিয়ে আনার পক্ষে। যার মাধ্যমে আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের সুযোগ তৈরি হয়।

ওইদিনই আয়া সোফিয়াকে মসজিদ রূপান্তরের পুনঃঘোষণা দেন এরদোয়ান। জাদুঘরে রূপ দেয়ার আগে ৫০০ বছর স্থাপনাটি মসজিদ ছিল। ৮৬ বছর পর আয়া সোফিয়ায় নামাজ আদায়ের সুযোগ পেলেন মুসলমানরা।

১৯৮৫ সালে জাদুঘর থাকাকালে আয়া সোফিয়াকে বিশ্বঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ইউনেস্কো। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য তুরস্কের সর্বাধিক দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আয়া সোফিয়া অন্যতম।

১৬ জুলাই তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক অধিদফতর মসজিদে রূপান্তরিত হওয়ার পরে আয়া সোফিয়া পরিচালনার জন্য সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি সহযোগিতা প্রোটোকল স্বাক্ষর করে। প্রোটোকলের অধীনে সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের কাজ তদারকি করবে। ধর্ম বিষয়ক অধিদফতর ধর্মীয় বিষয়টি তদারকি করবে।

মূল্যবান এ স্থাপনাটি বিনামূল্যে উন্মুক্ত থাকবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

জুলাই ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« জুন    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।