দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অর্ধেক মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছে। আরও ১ হাজার ১৮৫ জনের সেরে ওঠায় কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়েছে ৫৪ হাজার ৩১৮ জন। এ পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এদিকে আরও ৩৪ জনের মৃত্যুতে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৬৯৫ জনে পৌঁছেছে। এই সময়ে ৩ হাজার ৫০৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে দেশে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ১৫৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ নিয়ে দেশে ৭ লাখ ১২ হাজার ৯৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা বিবেচনায় শনাক্ত রোগীর হার ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ। এই পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানিয়ে শনিবার নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, মৃতদের মধ্যে ৩২ জন পুরুষ ও দুজন নারী। এদের ৩০ জন হাসপাতালে মারা গেছে, চারজনের মৃত্যু হয়েছে বাড়িতে। মৃতদের মধ্যে ২১-৩০ বছরের মধ্যে ১, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ১, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে ৬, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ৬, ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ১৩, ৭১-৮০ বছরের মধ্যে ৭ জন। মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ছিল ১৩ জন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের ১০, রাজশাহী বিভাগের ৪, সিলেট বিভাগের ৪, রংপুর বিভাগের দুই এবং খুলনা বিভাগের ১ জন।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ রোগ নিয়ে সারা দেশে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৭৫ জন, বিপরীতে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৩৭১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৪ হাজার ২২৫ জন হাসপাতালে সাধারণ শয্যায় চিকিৎসাধীন। আইসিউতে রয়েছে ১১২ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছে ৭২৬ জন; তাদের নিয়ে বর্তমানে ১৪ হাজার ২৬৭ জন আইসোলেশনে রয়েছে। কোয়ারেন্টাইনে আছে ৬৩ হাজার ৯১৩ জন।
তিনি জানান, নতুন করোনাভাইরাস শনাক্তে দেশে আরও একটি নতুন পরীক্ষাগার চালু হয়েছে। চট্টগ্রামে শেভরন ক্লিনিক্যাল ডায়াগনস্টিক প্রাইভেট লিমিটেড নামে নতুন এই পরীক্ষাগার চালু হওয়ায় দেশে এখন ৬৭টি পরীক্ষাগারে কোভিড-১৯ পরীক্ষা হচ্ছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮টি গবেষণাগার থেকে নমুনা সংগ্রহের প্রতিবেদন দিয়েছে। ৫টি বেসরকারি পরীক্ষাগার, দুটি বিশ^বিদ্যালয় এবং দুটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান তাদের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন দেয়নি। কাজেই আজ ৫৮টি পরীক্ষাগার থেকে পাওয়া নমুনার ফল দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরও ৭২৬ জনকে এবং এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ২৪ হাজার ৯৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছে ৪৯০ এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছে ৯ হাজার ৮২৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছে ১৪ হাজার ২৬৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৩১২ জনকে, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৭০২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছে ২ হাজার ৫২০ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ১৫৭ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ৬৩ হাজার ৯১৩ জন। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান ডা. নাসিমা সুলতানা।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, বিশে^ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯৯ লাখ ছাড়িয়েছে, মৃতের সংখ্যাও ৫ লাখ ছুঁই ছুঁই করছে। তবে ৫৩ লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছে। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানো করোনাভাইরাস গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। আর প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।