জিল্লুর রহমান রাসেল, ফরিদপুরঃ ফরিদপুর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইন্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজ বিকেল ৫ টায় ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে ফরিদপুর জেলায় করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সার্বিক প্রস্তুতি পর্যালোচনা বিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন ঃ চারটি বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ফরিদপুরে চিকিৎসকগণ রোগী দেখার ক্ষেত্রে খুবই উদাসীন হওয়ায় তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা কোন প্রকার প্রগান্ডা ছড়াবেন না। আপনারা কিভাবে রোগী দেখবেন বলেন, আমরা সেভাবেই আপনাদের সামনে রোগীকে উপস্থাপন করবো, যাতে আপনারা কোন প্রকার ক্ষতিগ্রস্ত না হন। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমাদের প্রত্যেককে এক হয়ে একটি পরিবারের মত এই দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে। কোন ক্রমেই বাংলাদেশের কোন লোক বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই এই দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়েছেন। আল্লাহর রহমতে যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলা করার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর আছে। খেটে খাওয়া মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, তারা যেন এক বেলাও না খেয়ে থাকে সে জন্য সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া আছে। ইনশাআল্লাহ কোন সমস্যা হবে না।
জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ আলীমুজ্জামান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও কোতোয়ালি থানা আওয়ামীলীগ সভাপতি আঃ রাজ্জাক মোল্লা, শহর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী বরকত ইবনে সালাম, জেলা যুবলীগ আহ্বায়ক এ এইচ এম ফুয়াদ, সিভিল সার্জন মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান, বিএমএ সভাপতি আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ খবিরুল ইসলাম, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ সাইফুর রহমান, প্রেসক্লাব সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, আরোগ্য সদন প্রাইভেট হাসপাতালের পরিচালক আওলাদ হোসেন বাবর প্রমুখ।
আরও পড়ুন ঃ এমপি মোশাররফ হোসেন ৫০০ পিপিই দিলেন চিকিৎসকদের মাঝে
জেলা প্রশাসক বলেন, করোনার সংক্রমণ মোকাবেলায় আমরা সার্বিক ভাবে প্রস্তুত রয়েছি। এখনও জেলায় কোন করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়নি। এটি আমাদের জন্য একটি আনন্দের সংবাদ কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাস যে ভাবে মহামারি আকার ধারণ করেছে তা থেকে বাঁচতে হলে এখন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষেধক হচ্ছে নির্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রাখা। আমরা যদি নিজেদেরকে আরও কিছুদিন ঘরের মধ্যেই আবদ্ধ রাখি তাহলে আশাকরি আমরা এই মহামারি থেকে রক্ষা পাবো। আমাদের খাদ্যের কোন সংকট নেই। পর্যাপ্ত পরিমান ত্রাণও বরাদ্দ রয়েছে। সরকার ফরিদপুর জেলায় ৩৬০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। পৌরসভা, আওয়ামীলীগ ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে যদি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয় তাহলে একটি পরিবারও না খেয়ে থাকবেনা।
এ সময় জেলা প্রশাসক ডায়াবেটিক হাসপাতাল ও ডাঃ জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালকে তাদের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করায় ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে সাংবাদিকদের পিপিই দিলেন ইন্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি
তিনি আরও বলেন, যদি বড় রকমের কোন দুর্যোগ দেখা দেয় তাহলে বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট হিসেবে ৮৫ টি বেড তৈরী রাখা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও আইসোলেশন সেন্টার তৈরী করার জন্য বেশ কয়েকটি ভবন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, করোনা মোকাবেলায় জেলার প্রত্যেকটি থানায় দুটি করে টিম কাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে টিমগুলো কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্যেকটি এলাকায় খোঁজ রাখা হচ্ছে কেউ বিদেশ ফেরত কিনা বা কোয়ারেন্টাইন প্রয়োজন কিনা আবার কেউ কোয়ারেন্টাইন শেষ করে আমাদের জানালে আমরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তাকে স্বাভাবিক চলাফেরার অনুমতি দিচ্ছি। এছাড়া পুলিশ লাইনে একটি কুইক রেসপন্স টিম তৈরী করা হয়েছে যারা কোন সংবাদ পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌছতে পারে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক জানান সাধারণ রোগীদের যাতে চিকিৎসা পেতে কষ্ট না হয় সে জন্য হাসপাতালে ৫ টি মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে রোগীরা সেখানে ফোন করে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিচ্ছে। এছাড়া অতি সংবেদনশীল রোগীদের জন্য আই সি ইউ ইউনিট তৈরী রাখা হয়েছে সেখানে একটি টিম সার্বক্ষণিক কর্মরত রয়েছে এবং সেটা আমরা নিয়মিত দেখভাল করছি। এতদিন আমাদের নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় আমরা সংকিত ছিলাম কিন্তু আমাদের সে সমস্যার সমাধান হয়েছে এখন আমরা সব ধরনের চিকিৎসা সেবাই দিতে পারবো।