পদ্মা সেতুর মূল ৪২টি ভিত বা খুঁটির মধ্যে সর্বশেষটির স্থাপন কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় পদ্মা সেতুর সবশেষ খুঁটির ওপরের অংশের ঢালাই কংক্রিটিং শুরু করা হয়। রাতে সর্বশেষ ২৬ নম্বর খুঁটির ক্যাপ ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে।প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে চলমান সর্বশেষ খুঁটির কাজ শেষের মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করল পদ্মা সেতু। জাজিরা প্রান্তের এই খুঁটির সর্বশেষ ঢালাই শুরুর সময় প্রকল্পের অনেক দায়িত্বশীল ব্যক্তিও অংশ নেন। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল সেতুর ৪২টি খুঁটি ছাড়াও দু’প্রান্তের আরও তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সেতুতে (ভায়াডাক্ট) রয়েছে আরও ৯১টি খুঁটি। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে সংযোগ সেতুর ৪৪টি এবং জাজিরা প্রান্তের সংযোগ সেতুর ৪৭টি খুঁটি। সর্বমোর্ট ১৩৩টি খুঁটি। সব খুঁটির কাজই এখন সম্পন্ন। তাই স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তবতার খুব কাছে। মূল ভিতের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাওয়া ছাড়া সেতুর অন্যান্য কাজও চলছে পুরোদমে।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেয়ান আব্দুল কাদের মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ৩৯টি স্প্যান মাওয়া পৌছেছে এবং ২৭টি স্থাপন হয়েছে। ১৪টি স্প্যান আগামী আগস্টের মধ্যেই সম্পন্ন হওয়ার সম্ভবনা আছে। যদিও সিডিউল অনুযায়ী সর্বশেষ স্প্যানটি বসার কথা রয়েছে আগামী ২ নবেম্বর।
এদিকে চীনের উহানে বাকী দু’টি স্প্যানও তৈরী হয়ে গেছে। উহানে করোনা পরিস্থিতি প্রভাব কেটে যাওয়ায় শিঘ্র এই দুই খুঁটিও মাওয়া আসছে। আর বসে যাওয়া ¯প্যানের ভেতরে নিচ তলায় রেলপথ ও ওপরের সড়কপথের স্লাব বসানো চলছে এক সাথে।
তিনি জানান, তাই পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি দ্বিতল হবে, যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। সেতুর এক খুঁটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব প্রায় ১৫০ মিটার। একেকটি খুঁটি ৫০ হাজার টন লোড নিতে সক্ষম।
পদ্মা সেতুর দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা জানান, নদী তলদেশের মাটির গুণগত বৈশিষ্ট্যগত চ্যালেঞ্জের কারণে ডিজাইন পরিবর্তন করে কিছুটা বিলম্ব হলেও অবশেষে সফলতা আসে। মাঝনদী ও মাওয়া প্রান্তে পদ্মাসেতুর ২২টি খুঁটিতে সবচেয়ে বেশি জটিলতা দেখা দিয়েছিল। প্রথমদিকে যে গভীরতার ধারণা নিয়ে কাজ এগোনে হচ্ছিল বাস্তবে তার সঙ্গে মিলেনি। এ নিয়েই বিপত্তি হয়েছিল সেতু নির্মাণে। এসব কারণে আটকে যায় ২২টি পিলারের কাজ। সবশেষে এমন একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় যাতে নদীর তলদেশে কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় মাটি বদলে নতুন মাটি তৈরি করে পিলার গাঁথা যায়। এই বিশেষ ‘স্ক্রিন গ্রাউটিং’ পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা সফলতা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন ঃ করোনায় ভিটামিন- সি, কার্যকরী ফলাফল
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূলসেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের ‘সিনো হাইড্রো করপোরেশন’