রেজাউল করিম,২৪ সেপ্টেম্বর,২০২১
সিএন্ডবি ঘাটের নৌডুবির শিকার হওয়া শিক্ষকদের নদী থেকে উদ্ধার করা সোনমিয়া (সোনামাঝি)এর হাতে দশ হাজার টাকা উপহার দিয়েছেন মানবিক সংগঠন ‘সুহৃদ’।
শুক্রবার বিকেলে পদ্মার তীরবর্তী বানু ফকিরের ডাঙ্গীর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ‘সুহৃদ’এর আহ্বায়ক রেজাউল করিম এ উপহার প্রদান করেন।
উপহার পেয়ে সোনামাঝি বলেন, “আমি গরীব মানুষ,আমার কোন আশা ভরসা নাই। গাঙ্গে ডুবা দুজন মানুষকে আমি আমার ভাঙ্গা নৌকায় তুলে এনেছি- এটাই আমার ভালো লাগছে। বিপদে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াক এটাই আমার চাওয়া।”
লাউয়ের জাঙ্গলা দেয়া উঠানের সামনে কাঁচা মাটির বারান্দায় দাঁড়িয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে সোনামিয়া বলেন, ” আমি বর্গাচাষ করি, মাছ ধরি, নাও বাই। আমি মানুষকে। মানুষের জন্যিই আমার পরান কান্দে। ভালোবাসি। নদীতে যারা ডুবে মারা গেছে তাগের আল্লাহ বেহেশতো দিক। আর যারা বেঁচে আছে তাগের জন্যি দুআ করি।”
এসময় সুহৃদ বন্ধুরা তার ভালো কাজের প্রশংসা করেন এবং বিপদে আপদে পাশে থাকার ভরসা দেন এবং বলেন সমাজে প্রান্তিক মানুষ, হৃদয়বান ও সাহসী সোনামাঝিরদের জন্য সুহৃদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
সোনামাঝিকে এ উপহার প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আবুল কাশেম, মাওলানা আবু আইয়ুব আনসারী,সাইদুর রহমান, জাহাঙ্গীর হোসেন, ব্যাংক কর্মকর্তা দেওয়ান মো. রেজাউল ইসলাম ( সোহেল) প্রমুখ।
গত ২৫ আগস্ট ফরিদপুরে সিএন্ডবি ঘাটে আকস্মিক নৌকাডুবির ঘটনায় ১৪ জন শিক্ষক পন্টুনের নীচে তলিয়ে গিয়ে প্রমত্ত পদ্মায় ভেসে যায়।
১২ জন শিক্ষক স্থানীয়দের ও প্রশাসনের সহাতায় উদ্ধার করা হয়।
সোনামাঝি নৌকা নিয়ে মাঝ দরিয়া থেকে সাংবাদিক রেজাউল করিম ও মাওলানা আবু আইয়ুব আনসারীকে মৃতপ্রায় অবস্থায় উদ্ধার করে আনেন।
কিন্তু শিক্ষক আজমল হোসেন ও আলমগীর হোসেনের সলিল সমাধি ঘটে।
এ প্রতিবেদকে এগিয়ে দিতে এসে সোনামিয়া আক্ষেপ করে কেঁদে বলতে থাকেন,” ভাই বিশ্বেস করেন আমি যদি ঐ দুজন স্যারকে উদ্ধার করতে পারতাম, আমার জীবন ধন্যি অইতো।”