সুমন ভূইয়া সাভারঃ মরণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেই চালু করা হয়েছে পোশাক কারখানা। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুধু আশপাশে থাকা শ্রমিকদের নিয়েই সীমিত আকারে কারখানা চালু করতে। যেসব শ্রমিক গ্রামের বাড়িতে আছেন তাদের না আসতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও চাকরি হারানোর ভয়ে ঢাকায় ফিরছেন অসংখ্য শ্রমিক।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কর্মস্থলে আসতে গিয়ে ব্যাপক বিপত্তিতে পড়ছেন তারা। ট্রাক, ভ্যান, রিকশা, সিএনজি, অটোরিকশায় করে যে যেভাবে পারছেন, সেভাবেই পাড়ি দিচ্ছেন শত শত মাইল। অনেকে পায়ে হেঁটেই রওনা দিয়েছেন ঢাকার উদ্দেশে। এতে করে আর্থিক সংকটের মধ্যেও ভাড়া হিসেবে কয়েকগুন বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে তাদের।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে পাটুরিয়া ফেরি ঘাট পার হওয়ার সময় ঢাকামুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড় লেগে যায়। সুযোগ বুঝে ঘাটের ইজারাদাররাও নির্ধারিত টোলের চাইতে দ্বিগুণ টোল আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘাট পার হওয়ার পর শ্রমিকরা পড়েন আরো দুর্ভোগে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঢাকায় আসার মতো কোনো যানবাহন সেখানে নেই। তাই উপায় না পেয়ে পিকআপ, প্রাইভেটকার, ইঞ্চিন-চালিত অটোবাইকে করে অধিক ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা দেন তারা। অন্যান্য সময় পাটুরিয়া থেকে নবীনগর ও গাবতলী পর্যন্ত ভাড়া ৬০-৯০ টাকা নেয়া হয়। কিন্তু আজ জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে দিতে হয়েছে।
এ বিষয়ে কয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, ‘মোবাইলে মেসেজ দিয়ে বলা হয়েছে, যেকোনো মূল্যে কাজে যোগ দিতে হবে। নয়তো ওই জায়গায় কর্তৃপক্ষ বিকল্প লোক নিয়োগ দেবে।’ তাই ভাইরাসের ঝুঁকি সত্ত্বেও চাকরি হারানোর ভয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে গাদাগাদি করে কাজে ফিরতে হচ্ছে। এ ছাড়া কোনো উপায় নেই।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে মানিকগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগের ইন্সপেক্টর (টিআই) রাসেল আরাফাত বলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের বিকল্প পথে আসতে হচ্ছে। তাই সুযোগ বুঝে সবাই ভাড়া বেশি নিচ্ছে। তবে কেউ অভিযোগ করলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে