নোভেল করোনাভাইরাসের সঙ্গে শিশুদের রোগ কাওসাকির যোগসূত্র পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের চিকিৎসকরা। তবে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত না হওয়ায় চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও গবেষকরা নজরদারি জোরদার করেছেন।
কাওয়াসাকি কিছুটা বিরল শিশুরোগ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ রোগীর সন্ধান মেলে। তবে জাপানে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা একটু বেশি। এই রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে, জ্বর, চামড়ায় লাল র্যাশ, চোখের প্রদাহ (লাল চোখ), হাত-পা ফোলা, ঠোট খসখসে হওয়া ও ফুলে যাওয়া। এই রোগে আক্রান্ত হলে শিশুদের হৃৎপিন্ডের ধমনী প্রসারনের ঝুঁকি বেশি থাকে। তিন মাসের নিচে এবং পাঁচ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের বেলায় এই রোগ সাধারণত হয় না। চিকিৎসায় এই রোগে আক্রান্ত শিশু সুস্থ হয়। তবে মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে।
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে ২০ শিশুর কাওয়াসাকিতে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। অবশ্য তাদের সবার কোভিড-১৯ রিপোর্ট পজিটিভ আসেনি, অর্থাৎ করোনায় আক্রান্ত হয়নি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক এলবিসি রেডিওকে মঙ্গলবার বলেছেন, ‘এটা নতুন রোগ, আমরা ধারণা করছি করোনাভাইরাস ও কোভিড-১৯ ভাইরাসের কারণে এটি হতে পারে। আমরা শতভাগ নিশ্চিত নই। কারণ কিছু কিছু আক্রান্তের করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ ফল আসেনি। তাই আমরা এখন বিপুল গবেষণা করছি। তবে এটা এমন কিছু যার জন্য আমরা উদ্বিগ্ন।’
উত্তর ইতালির বারগামোতে বিপুল সংখ্যক লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত মার্চের শেষ থেকে এখানে ২০ শিশুর কাওয়সাকিতে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই সংখ্যা দেশটিতে গত তিন বছরে কাওয়াসিতে আক্রান্তের সংখ্যার প্রায় সমান।
বুধবার ফরাসি স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভার ভেরান ফ্রান্স ইনফো রেডিওকে জানান, প্যারিসের হাসপাতালগুলোতে প্রায় ১৫ শিশুর মধ্যে কাওয়াসাকির লক্ষণ পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘ফ্রান্স ও ব্রিটেনের কিছু শিশুর দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ত্ব পাওয়া গেছে।’করোনাভাইরাস ও কাওয়াসাকির মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কিনা জানতে তিনি চিকিৎসকদের আরও অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় কাওয়াসাকিতে আক্রান্ত ৬ মাসের এক শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার কোভিড-১৯ রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তবে করোনা ও কাওয়াসাকির মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে নাকি এটি কাকতালীয় তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞ সঞ্জা রাসমুসেন।
বুধবার রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অন্তত তিন শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তাদেরকে কাওয়াসাকির লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।