নিরঞ্জন মিত্র (নিরু)ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি:-
করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন ফরিদপুরের র্সবজনশ্রদ্ধেয়, শিক্ষাবিদ, জ্ঞানের আলোর পথিকৃৎ, সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষ (তারাপদ স্যার)। ২ মার্চ শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর আইসিইউতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।
এদিকে প্রবীণ শিক্ষক ও সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষের মৃত্যুতে ফরিদপুরে এক শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অংঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ফরিদপুরে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দসহ সব শ্রেনি পেশার মানুষ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
শ্রী জগদীশ চন্দ্র ঘোষ (তারাপদ) এর মৃত্যুতে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে শনিবার সকাল ১০ টায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার, উপজেলা পরিষদ, ফরিদপুর প্রেসক্লাব, মেয়র ফরিদপুর পৌরসভা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, নাগরিক মঞ্চ, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ, প্রথম আলো বন্ধুসভা, উদীচী ফরিদপুর, ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ফরীদপুর টাউন, থিয়েটার, ফুলকি ফরিদপুর, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান বিপিএম, পৌর মেয়র অমিতাভ বোস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হক ভোলা মাস্টার, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মোশার্রফ আলী, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সদস্য সচিব আইভি মাসুদ, ফরিদপুর প্রেসক্লাব এর সভাপতি মো: কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ, সৈয়দ মুদাররিস আলি ইচ্ছা জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক, অধ্যাপক রেজভী জামান প্রমুখ।
এর আগে তার লাশ প্রেসক্লাবে এসে পৌছলে শ্রী রামকৃষ্ণ মঠের সাধুরা পবিত্র বেদমন্ত্র ও শ্রীমদ্ভগবত গীতা পাঠ করেন। প্রসঙ্গত গত ২৯ মার্চ জাগদীশ চন্দ্র ঘোষ অসুস্থতাজনিত কারণে ডায়বেটিক হাসপাতালে ভর্তি হলে তার নমূণা পরীক্ষায় করোনা সনাক্ত হয়। পরে ৩১ মার্চ তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হলে শুক্রবার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান। এদিকে সর্বজন শ্রদ্ধেয় তারাপদ স্যারকে ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সকলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে অম্বিকাপুর গোবিন্দপুর পৌর মহাশ্মশান ঘাটে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
উল্লেখ্য জগদীশ চন্দ্র ঘোষের জন্ম মানিকগঞ্জের কাঞ্চনপুর গ্রামে ১৯২৯ সালের ৮ আগষ্ট। এরপর থেকে তিন ও তার পরিবার বাস করতেন সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুরে। বর্তমানে তিনি শহরের ঝিলটুলীতে বসবাস করতেন। পিতার নাম যোগেশ চন্দ্র ঘোষ। প্রথম জীবনে পোস্ট মাস্টারের চাকরি নিলেও পরে শিক্ষকতা পেশা বেছে নেন। ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতায় যোগ দেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ঈশান গোপালপুরের গণহত্যায় নিহত ২৮ জনের মধ্যে তাঁর বাবা যোগেশ চন্দ্র ঘোষ, ভাই গৌর গোপাল ঘোষও ছিলেন।