করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জনগণ ঘরবন্দি। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান পাটও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত থাকে খোলা। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা কাটায় জনগণের যাতে কষ্ট না হয় সে লক্ষেই ফরিদপুর জেলা যুবলীগ ৮ রকমের পণ্য নিয়ে শুরু করে ভ্রাম্যমাণ বাজার। যা এরইমধ্যে পণ্যের তালিকা বৃদ্ধি পেয়ে ৭৫-এ দাঁড়িয়েছে। চাল-ডাল-তেল-আলু-পিয়াজ-সাবানের সঙ্গে এখন রোজাদারদের সুবিধার্থে এখানে পাওয়া যাচ্ছে খেজুর-তরমুজ এমনকি বেল-কলাও। এছাড়া পাওয়া যায় প্রায় সব ধরনের সবজি।
এবার ক্রেতাদের সুবিধার্থে এতে যুক্ত হয়েছে হটলাইনেও পণ্য ক্রয়ের সুবিধা। কোনো প্রকার সার্ভিস চার্জ ছাড়া নামমাত্র পরিবহন খরচ দিলেই সাধারণ ক্রেতার বাড়ি পৌঁছে দেয়া হচ্ছে কাঙ্খিত পণ্য।
গত মাসের ৪ এপ্রিল ১০টি ট্রাকযোগে শহরের বিভিন্ন পাড়ামহল্লায় ঘুরে ঘুরে এসব পণ্য স্বল্প মূল্যে বিক্রি শুরু হয়। পণ্যের মূল্যে কম থাকার কারণে ক্রেতাদের চাহিদা বাড়ায় ২০টি স্থানে বসানো হয় দোকানও। ফরিদপুর জেলা যুবলীগের উদ্যোগে বর্তমানে এই কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক কর্মী।
কর্মসূচীর উদ্যোক্তা ফরিদপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এএইচএম ফোয়াদ বলেন, সরকার গত ২৫ মার্চ হতে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়ার পর ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নির্দেশনায় এই কর্মসূচী চালু করা হয়। এতে আমরা জনগণের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি।
তিনি বলেন, এরইমধ্যে শহরের প্রায় ৩৫ হাজার পরিবার এই ভ্রাম্যমাণ বাজারের সুবিধা নিয়েছেন। আমরা এখন হটলাইনে এই সেবা চালু করেছি। আমাদের কর্মীরা চাহিদা মোতাবেক বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে কোন চার্জ ছাড়াই। তিনি বলেন, দেশে করোনা ভাইরাসের কারণে যতোদিন এই পরিস্থিতি থাকবে ততোদিন চলবে এই কার্যক্রম। তিনি আরও বলেন প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ও ইউনিয়নে আমাদের কর্মী রয়েছে, আমাদের এই কর্মীরা বিভিন্ন বাজারে বাজারে ঘুরে পণ্য কেনার জন্য। সাধারণ জনগণ কেনাকাটা করার পর ঐ সকল বাজারে কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্য মুল্য দিয়ে আমরা পণ্য ক্রয় করি। যাতে আমাদের কারণে পণ্যের কোন সংকট তৈরী না হয়।
শহরের অনাথের মোড়ে এই সুলভ মূল্যে দোকানে পণ্য কিনতে আসা সাইফুর রহমান বলেন, বাজার হতে ঘুরে এখানে পণ্য কিনতে এসেছেন তিনি। প্রতিটি পণ্যই বাজার দরের চেয়ে কম মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে। তুলনামুলক কম দামে অনেকেই এখানে থেকে বাজার সদাই সেরে নিচ্ছেন।
আনোয়ারা বেগম নামে ঝিলটুলী সোনালী ব্যাংকের সামনের দোকানের আরেক ক্রেতা বলেন, এই দোকানের কারণে অনেক কম দামে এসব পণ্য কিনতে পাচ্ছি। বাজারে বিক্রি হওয়া ৫০ টাকা দরের বেগুন এখানে ৩৫ টাকা দরে কিনেছি। এক হাজার টাকার বাজার করলে কমপক্ষে ১শ’ টাকা বেঁচে যাচ্ছে। যা দিয়ে আরও কিছু পণ্য কিনতে পারছি।
ভ্রাম্যমাণ এই নিত্যপণ্যের বিক্রি কর্মসূচীর তত্ত্বাবধায়ক শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম নাসিম বলেন, গত এক মাসে ৫ লাখ ৬০ হাজার ডিম বিক্রিসহ প্রায় ৮০ টন চাল, ২৫ টন চিনি, ২০ টন করে ডাল, পেঁয়াজ ও তেল, ১৫ টন ছোলা ও আলু, ২ টন খেজুর ও ৪ টন লবন বিক্রি হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের প্রায় সকল পণ্যই এখানে পাওয়া যাচ্ছে।