নিরঞ্জন মিত্র ( নিরু) ( ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুর সদরের গেরদা ইউনিয়নের বাখুন্ডা রেল রাস্তা সংলগ্ন এলাকায় আদালতের নির্দেশে অবৈধ দখলকৃত ৩৮ শতাংশ জমিতে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে।
(৪ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার ফরিদপুর জেলা জজ আদালত কর্তৃক দায়রা জজ কোর্টের জেলা নাজির প্রণব কুমার চক্রবর্তীর নেতৃত্বে দুপুর ১২ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত এই উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
জানা যায়, মালিকানা বিষয়ে সম্প্রতি বিবাদমান এই ৩৮ শতাংশ জমি জরিনা বেগমের পক্ষে রায় দেন দেওয়ানী সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত।
এরই প্রেক্ষিতে জমির মালিকানা বুঝিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে এই অভিযান চালানো হয়। উচ্ছেদকৃত জমি জাল দলিল তৈরি করে জমিটি জোরপূর্বক ভাবে অবৈধভাবে দখল করে আসছিল বিবাদী মেহেরা বেগম।
এসময় উচ্ছেদ অভিযানে জেলা দায়রা জজ কোর্টের জেলা নাজির প্রণব কুমার চক্রবর্তী, কমিশনার এ্যাড মোঃ নূর ইসলাম, সার্ভেয়ার আব্দুস ছালাম, কোতয়ালী থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত ছিলেন।
জেলা নাজির প্রণব কুমার চক্রবর্তী বলেন , দীর্ঘ নয় বছর বেদখলে ছিল জায়গাটার মালিক জরিনা। জায়গা দখলের জন্য জরিনা বেগম মামলা করে মামলায় ডিগ্রিপ্রাপ্ত হন। আর সেই জায়গার দখল বুঝিয়ে দেয়ার জন্য আদালত আমাকে নির্দেশ করে। আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি।
মামলার বাদী জরিনা বেগম জানান, জমিটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় জাল জালিয়াতি করে দখল করে ভবন নির্মাণ করে আসছিলো মেহেরা বেগম।
কিনেছেন বলে একটি জাল দলিল তৈরি করে জমিটি জোরপূর্বক দখল করে নেন
ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী একটি মহল এ দখলদারকে সহায়তা করছে। তখন কাগজপত্রের নকল তুলে দেখি, এবং জাল করেছে বলে জানতে পারি। আমি আদালতের সরান পর্ন হয়ে মেহেরা বেগমকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করি। আদালত জমিটি অবৈধ দখলমুক্ত করে আমাকে দখল বুঝিয়ে দেয়।
মামলা সুত্রে জানা যায়, ৮৪ নং বাখুন্ডা মৌজার সাবেক আরএস ১৭৮০ নং দাগের ৩৮ শতাংশ জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিলো। এই সম্পত্তির দাবিদার হিসাবে জরিনা বেগম দেওয়ানী সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৩১৭/১২ নং মোকদ্দমার দায়ের করে।
দির্ঘ নয় বছর জমিটির প্রকৃত মালিক জরিনা বেগম মামলা পরিচালনা করার পরে, আদালত শুনানি শেষে নথিপত্র পর্যালোচনা করে জমির মালিক জরিনা বেগমের পক্ষে আদালত মালিকানা স্বত্ব আদেশ দেন।
এছাড়া যার কাছ থেকে বিবাদী মেহেরন জমিটি কিনেছেন বলে দাবী করে দখল করে। সেই দলিলটি আদালতে পেশ করেন মেহেরন, সেটি জাল দলিল বলে আদালতে প্রমাণিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে বাদী জরিনা বেগমের প্রকৃত মালিকানা পক্ষে আদালত রায় দেন। এরপরেও বিবাদী মেহেরা বেগম জমির দখল ছাড়েননি। ফলে বিবাদী পক্ষের কাছ থেকে মালিক জরিনা বেগম জমিটির দখল পাচ্ছিল না। পরে বাদী পক্ষ দখল উচ্ছেদের জন্য দেওয়ানী জারী নং ১৩/২০২০ মামলা দায়ের করে।
জারী মামলায় আদালত অবৈধ দখল উচ্ছেদের জন্য কমিশনার কতৃক সার্ভে দ্বারা জায়গা নির্ধারিত করে বাদী জরিনা বেগমকে দখল বুঝিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন।