• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভর্তি হতে না পেরে ফেরত যাচ্ছেন করোনা রোগীরা

মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল

চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য রোগীর চাপ বেড়েছে। করোনা ওয়ার্ডে শয্যা খালি না থাকায় অনেক রোগীকেই ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। আজ রোববার দুপুরে সরেজমিনে এ দৃশ্য দেখা যায়।হাসপাতালের নতুন ভবনে ঢুকতেই দেখা যায়, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া প্রচুর রোগী গা–ঘেঁষাঘেঁষি করে ওষুধের কাউন্টার থেকে ওষুধ নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের মধ্যে নেই কোনো সামাজিক দূরত্ব।করোনা ওয়ার্ডের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ভর্তির জন্য চারজন রোগী অপেক্ষা করছেন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে ভর্তি করা হলেও ওয়ার্ডে শয্যা খালি না থাকায় দুজন রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের বাইরে ভর্তির জন্য রোগী নিয়ে অপেক্ষা করছেন স্বজনেরা।
বেলা পৌনে দুইটার দিকে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ভর্তির সুযোগ না পেয়ে করোনা ওয়ার্ডের বাইরেই সিলিন্ডার ভাড়া করে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল করোনা রোগী মো. সাইদুল ইসলামকে (৮৫)। তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার তাহেরপুর গ্রামে। তাঁর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ছিল ৬৭। সঙ্গে থাকা মেয়ে সুফিয়া বেগম বলেন, হাসপাতালে দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও শয্যা না থাকায় তিনি বাবাকে ভর্তি করাতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে তাঁদের।
একই সময়ে মো. আওয়াল (৭০) নামের আরেক রোগীকে বাইরে অবস্থান করতে দেখা যায়। তিনিও দেড় ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করে ভর্তি হতে পারেননি বলে জানালেন। তাঁকেও বাইরে থেকে সিলিন্ডার ভাড়া করে এনে অক্সিজেন নিতে হচ্ছে। তাঁর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আলীনগর মহল্লায়।করোনা ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, গতকাল শনিবার দুপুরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে করোনা ওয়ার্ডে শয্যা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হবে। কথা ছিল আজ সকাল থেকে সেটি চালু হবে। কিন্তু গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার মধ্যেই ৫০টি শয্যায় করোনা রোগী ভর্তি হয়ে যান। রোগীর যে চাপ, তাতে শয্যা বাড়িয়ে ১০০ করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে ৩০ শয্যার জন্য তিনজন চিকিৎসক ছিলেন করোনা ওয়ার্ডে। এখন চারজন চিকিৎসক আছেন। নার্সের সংখ্যা বাড়িয়ে ছয় থেকে সাতজন করা হয়েছে। আরও চিকিৎসক ও নার্স বাড়ানো দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।চিকিৎসক শাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, হাসপাতালের একজন রোগীকে এখনই আইসিইউ–সুবিধা দেওয়া দরকার। কিন্তু তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো যাচ্ছে না। সেখানে শয্যা ফাঁকা নেই। হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ১১ জন রোগী ভর্তি। তাঁদের মধ্যে নয়জনই সন্দেহভাজন করোনা রোগী। এ ছাড়া মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি ১৪ জনের মধ্যে ৫ জনই সন্দেহভাজন করোনা রোগী। তাঁদের মধ্যে রোজলী বেগম নামের একজনের অবস্থা খারাপ। তাঁকে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য রাজশাহীতে পাঠানো হলেও শয্যা ফাঁকা না থাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেওয়ার পর  স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে ওষুধ সংগ্রহ করছেন রোগীরা
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নাদিম সরকার বলেন, সংক্রমণের যে পরিস্থিতি, তাতে এই মুহূর্তে শয্যা বাড়িয়ে ২০০ করা হলেও রোগী ভর্তি হয়ে যাবে। কিন্তু ৫০ শয্যার বেশি পরিচালনার সক্ষমতা এই হাসপাতালের নেই।এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা আজ চাঁপাইনবাবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দর ও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। পরে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সাংসদ সামিল উদ্দীন আহমেদ, সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরী প্রমুখ। বৈঠকে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের ধরন যা–ই হোক, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে তা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার ৩৪৯ জনের করোনা পরীক্ষায় ১৪২ জনের শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গত শুক্রবার শনাক্তের হার ছিল ৫৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।