• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
প্রফেসর আনম আবদুস সোবহান  সেকাল থেকে একাল#

প্রফেসর আনম আবদুস সোবহান  

(কবি,লেখক  ও গবেষক)

সেকাল থেকে একাল#

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উত্তরে গুড় বাজার। এটি ফরিদপুর শহরের বাজার এলাকা। এই গুড় বাজারের উত্তরে পান বাজার ও দুধ বাজার।পান দুধ বাজারের পূর্বে ছিল পঞ্চাশ দশকে সাধারণ হোটেল। গ্রাম থেকে মামলা ও অন্যবিধ কারণে আসা ব্যক্তি এই হোটেল গুলিতে অবস্থান করত। মৃধার হোটেলের বেশ নাম ছিল। আমি ছোট্ট বেলায় তাঁকে দেখেছি। অনেকটা গোলগাল চেহারা। গায়ের রঙ ফর্সা। সম্ভবত তাঁর নাম ছিল আহমদ আলী মৃধা। তিনি পূর্ব খাবাসপুরে কুমার নদীর পাড়ে বসতি স্থাপন করেন। অনেক পরে তাঁর পুত্র আবদুল আলী মৃধার সাথে আমার পরিচয় হয়। তিনি ফরিদপুরে আইন ব্যবসা করতেন। আমি তখন ফরিদপুর ইয়াছিন কলেজে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ।অত্যন্ত অমায়িক আবদুল আলী ভাই অকাল প্রয়াত। একজন সাচ্চা মুসলমান ছিলেন। আমি গুড় বাজারে ১৯৪৩ থেকে ১৯৫০ সাল 
পর্যন্ত ছিলাম। এখানেই আব্বার বৈঠক খানা(চেম্বার) ছিল।এই টিনের বৈঠক খানার পেছনে একটি টিনের ঘর ও রান্না ঘর ছিল । চেম্বারের দক্ষিণ দিয়ে ছিল গলি পথ । পাশে দেয়াল ও কালিপদের চায়ের দোকান। এরপর একটি পাকা বাড়ি । এই বাড়িতে আব্বার মহুরী (ক্লাক) মোতাহার হোসেন তালুকদার থাকতেন । এটি গোড় গোপাল আঙিনার সম্পত্তি। এরপর ওরিয়েন্টাল ফার্মেসী ও প্রিন্টিং প্রেস । আমরা যে বাড়িতে বসবাস করতাম তা আব্বা হিন্দু মালিকের কাছ থেকে খরিদ করেন । পরে এই বাড়ি সংলগ্ন উত্তরের অংশটিও খরিদ করেন । এই জায়গায় দ্বিতল বিল্ডিং নির্মাণ করেন। এই বাড়ির উত্তরে অবস্থিত বাড়িটি ছিল আব্বার চাচা শ্বশুর আবদুল ওয়াজেদ মোক্তারের । আব্বা ভাঙ্গা হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেই বিয়ে করেন ও আইন পড়েন । অর্থাৎ মোক্তার শিপ বা মোক্তারি। সে আমলে অনগ্রসর মুসলমান সমাজে পড়া লেখার সুযোগ বেশি ছিল না। আমার দাদা মোহাম্মদ মোহন প্রত্যাশা করতেন আব্বা পড়া লেখা বাদ দিয়ে কৃষি কাজ করুক। কিন্তা আব্বা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কৃষিকাজ করবেন না। তাই অনেকটা জেদ করে লেখা পড়া করেন। একবারে মোক্তারি পাস করা কঠিন ছিল। যা হোক,আব্বা একবারেই মোক্তার শিপ পাস করেন । সে আমলে আইন জীবীদের বিরাট অংশই ছিল হিন্দু । কি উকিল, কি মোক্তার। মুসলমান আইন জীবীর সংখ্যাছিল হাতে গোনা। আব্বার চাচা শ্বশুর ছিলেন একজন মুসলমান  প্রবীন আইনজীবী মোক্তার। আইন পেশা শুরু করেই আব্বা গ্রাম থেকে তাঁর স্ত্রী অর্থাৎ
আমার মাকে নিয়ে আসেন । আমার দাদাকে আমি দেখিনি ।শুনেছি তিনি দুবার ফরিদপুরে এসেছিলেন। আব্বাকে লোহাকাঠ দিয়ে দুটি চেয়ার বানিয়ে দেন। এই দুটি চেয়ার আমি ঝিলটুলিতে এনে রেখেছিলাম। আমার অনুপস্থিতিতে চেয়ার দুটির কি হয়েছে আমার জানা নেই। গুড় বাজারের দ্বিতল বিল্ডিংটিও আজ আমাদের নেই। প্রতিকূল অবস্থায় তা হস্তান্তরিত করে সমস্যা মুক্ত হই। যদিও অর্থনৈতিক দিয়ে তা লাভজনক ছিল না। একাল সেকালে অনেক পার্থক্য। তাই এরুপ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এক সময় সম্পত্তিও মূল্যহীন হয়ে যায়।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।