করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসায় ‘ফ্যাভিপিরাভির’ ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কার্যকর ফল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশি ওষুধ কোম্পানি বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস।
বুধবার ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে এক সেমিনারে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহাযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ গোলাম মগ্নি মওলা।
সেখানে বলা হয়, ফ্যাভিপিরাভির ৫০ জন করোনা রোগীর ওপর ট্রায়াল করা হয়েছে। ওষুধ প্রয়োগের ৪ দিনের মাথায় ৪৮ শতাংশ এবং ১০ দিনের মাথায় ৯৬ শতাংশ করোনামুক্ত হয়েছেন।
‘বাংলাদেশের হাসপাতালসমূহে করোনা রোগীদের ওপর ফ্যাভিপিরাভির ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে এ সংক্রান্ত তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন ডা. সৈয়দ গোলাম মগ্নি মওলা। সেমিনারটি আয়োজন করে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
সেমিনারে জানানো হয়, ফ্যাভিপিরাভির হলো ওষুধটির জেনেরিক নাম। বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের উৎপাদিত ওষুধের নাম ‘ফ্যাভিপিরা’। এই ওষুধটি জাপানে ফুজি ফিল্মের সহযাযোগী প্রতিষ্ঠান তোয়ামা কেমিক্যাল কোম্পালি প্রথম উদ্ভাবন করে। তারা অ্যাভিগান নামে বাজারজাত করছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর চীনে এই ওষুধের প্রথম ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়। এরপর রাশিয়া এবং সর্বশেষ ঢাকায় ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো হয়। এই দুই দেশের মতো ঢাকা ট্রায়ালেও এই ওষুধের একই রকম কার্যকারিতা পাওয়া গেছে।
ডা. সৈয়দ গোলাম মগ্নি মওলা বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের ওপর এই ওষুধ প্রয়োগের চারদিনের মাথায় ৪৮ শতাংশ এবং ১০ দিনের মাথায় ৯৬ শতাংশ রোগী করোনাভাইরাসমুক্ত হয়েছেন বা সেরে উঠেছেন। পরীক্ষার সময় প্লাসেবা গ্রুপের (যাদের বিকল্প ওষুধ দেওয়া হয়, বাস্তবে তা ওষুধ নয়) ক্ষেত্রে এই হার ছিল চারদিনের মধ্যে শূন্য শতাংশ এবং ১০ দিনের মধ্যে ৫২ শতাংশ। বিকল্প ওষুধ গ্রহণকারীদের চেয়ে এই ওষুধে রোগীর ফুসফুসের কার্যক্ষমতা তিনগুণ উন্নতি হয়েছে।
সেমিনারে বলা হয়, যারা কোভিড-১৯ পজিটিভ নন বা কোনো লক্ষণ নেই, তারা এই ওষুধ খাবেন না। এই ওষুধটি শুধু তারাই খাবেন যারা আরটি পিসিআর পজিটিভ।
ডা. এ বিএম আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই স্টাডিকেই ফাইনাল বলা যাবে না। ঢাকার বাইরের ফলাফল পাওয়া গেলে পরবর্তী সময়ে আরও বেশি নিশ্চিত করে বলা যাবে।’
সেমিনারে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ওষুধটি কার্যকর ও নিরাপদ কিনা তা জানার জন্যই মূলত বাংলাদেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঢাকা ট্রায়াল’। ওষুধ প্রশাসন ও বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের নিয়ম মেনে এই ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়। এই ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়েছে ডাবল ব্লাইন্ড, প্লেসবো কন্ট্রোলড পদ্ধতিতে।