• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ ইং
আনম আবদুস সোবহান এর সেকাল থেকে একাল২

আনম আবদুস সোবহান এর 

সেকাল থেকে একাল -২

গুড় বাজারের পশ্চিমে চকবাজার।কোতোয়ালি থানার পশ্চিম দিকে প্রথম গলি খলিফা পট্টি,দ্বিতীয় চকবাজার ও তৃতীয় গলি ষ্টেশনারী, কাপড় ইত্যাদি। এই তিনটি গলির দুপাশ্বস্থ দোকান ও পশ্চিমে কুমার নদীর পূর্ব দিকে অবস্থিত মাছ বাজার,ময়রা পট্টি নিয়ে ছিল বাজার এলাকা।

এই চকবাজারের উত্তর দিকে পূর্বে পশ্চিমে অবস্থিত দীর্ঘ সড়ক।এই সড়কের দুপাশ দিয়ে বাজার এলাকায় ছিল নানা বিধ দোকান। এই সড়কের পশ্চিমের অংশ গোয়াল চামট ও দক্ষিণের অংশ ফরিদপুর শহর ও প্রধান আবাসিক এলাকা ঝিলটুলি।

এই সড়ক ঐতিহাসিক শের শাহ সড়কেরই অংশ হিসেবে উল্লেখিত।যা যশোর রোড নামে পরিচিত ছিল।পাকিস্তান আমলে নাম হয় পাকিস্তানের পিতা নামে আভিহিত মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর নামে জিন্নাহ এভিনিউ । ১৯৭১ উত্তর স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নাম করা হয় মুজিব সড়ক।এই রাস্তার শেষ প্রান্তে টেপাখোলা।

এখানে এক সময়ে দি সিটি অব ঢাকা ইত্যাদি বড় বড় লঞ্চ এসে ভিড়ত।এই পথে লোকজন ঢাকায় বুড়ি গঙ্গা ঘাটে গিয়ে পৌছত।ফরিদপুর হিন্দু প্রধান এলাকা। অনেক দামী নামী হিন্দুরা এই জেলা শহরে বসবাস ও ব্যবসা বানিজ্য করতেন।১৯৪৭ সালে হিন্দুদের স্বচ্ছল পরিবারের বড় একটি অংশ ভারতে চলে যায়।এরপরও বহু সাধারণ হিন্দু পরিবারের সাথে স্বচ্ছল পরিবার ফরিদপুর জেলা শহরে থেকে যায়।এই সেদিন পর্যন্ত নীলটুলী ও গোয়াল চামট এলাকায় বহু হিন্দু বসতি ছিল।

কোনো কোনো পরিবার সদস্যদের অংশ বিশেষ ইন্ডিয়ায় যায়। একটা অংশ থেকে যায়।এই যাওয়া নিয়ে নানা কথা প্রচলিত আছে।আমার ফরিদপুরে অবস্থান ১৯৪৩ থেকে ২০০৬ সাল।আমি এই দীর্ঘ সময়ে হিন্দুদের ভারতে যাত্রার কারণ হিসেবে কোনো অরাজক অবস্থা দেখিনি। এক মাত্র মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ঘটণা ছাড়া।এ সময়েও সাধারণ মুসলমানদের সাথে হিন্দুদের সুসম্পর্ক ছিল মানবিক।

এই শহরের কাপড়ের ব্যবসা,চালের ব্যবসা,মুদি ও ষ্টেশনারী,স্বর্ণ ইত্যাদি ব্যবসায় হিন্দুদের দীর্ঘ দিন প্রাধান্য ছিল।হিন্দুদের ভারতে যাওয়ার ফলে শূন্য স্থান মুসলমানদের একটি অংশ পূরণ করেছে।স্কুল কলেজের শিক্ষক,উকিল মোক্তার সর্ব ক্ষেত্রে আমি তাঁদের উজ্জ্বল উপস্থিতি দেখেছি।

ফরিদপুর শহরে ফরিদপুরের মুসলমানদের প্রাধান্য অল্পই। এই শহরের উল্লেখযোগ্য মুসলমানরাই বলা যায় বহিরাগত।এই শহরের ব্যবসায়ীদের উল্লেখযোগ্য মুসলমানই নোয়াখালী,ঢাকা,কুমিল্লা,গোপাল গঞ্জ থেকে আসা।আইন জীবী,চিকিৎসকদের বড় অংশই গোপালগঞ্জ, গোয়ালন্দ ও মাদারিপুরের। আমার আব্বাও এসেছিলেন গোপালগঞ্জ থেকে।

আব্বার চাচা শ্বশুর আবদুল ওয়াজেদ মোক্তার,আবদুস সালাম খান, খান বাহাদুর মোহাম্মদ ইসমাইল প্রমুখ গোপালগঞ্জের লোক।আদেল উদ্দিন আহমদ,আবদুর রহমান বাকাউল প্রমুখ মাদারিপুর শরিয়ত পুরের লোক। তমিজ উদ্দিন খানের মূল বাড়ি গোয়ালন্দের খান খানানপুর।

ফরিদপুরের উল্লেখযোগ্য মুসলিমদের মধ্যে ময়েজ উদ্দিন বিশ্বাসের পরিবার, হাফেজ ইব্রাহিমের পরিবার,কোমরপুর – আলিপুরের কবির পরিবার, আলিপুরের খা পরিবার, হাজী রহমত পাল পরিবার ইত্যাদি।

আওয়ামী লীগের ইমাম উদ্দিন আহমদ ফরিদপুর শহরের কললাপুরের অধিবাসী রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের একজন উল্লেখিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন।ফরিদপুরের লোকজনের সাথে ছিল যার গভীর সম্পর্ক।

আমিও জন্ম ও কর্ম সূত্রে এই ফরিপুর শহরেরই একজন।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।