• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মে, ২০২৪ ইং
সাপের কামড়ে প্রাণ যায় ৬ হাজার মানুষ প্রতি বছর

ছবি প্রতিকী

ঘটনাটি ঘটে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের মালশিন গ্রামে। গভীর রাতে রাজিয়া খাতুন (২৫) ও তার চার বছরের শিশুপুত্রকে ঘুমের মধ্যে সাপে কাটে। তাদের চিত্কারে আশপাশের লোকজন এসে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মা ও শিশু উভয়ই মারা যায়।

বাংলাদেশে সর্বশেষ ২০১০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর আনুমানিক ৬ লাখ মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হন এবং ৬ হাজার মানুষ মারা যান। গত বছর বন্যার পানিতে মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ ছিল সাপের কামড়। জানামতে এ বছর বন্যায় এখন পর্যন্ত সাপের কামড়ে মারা গেছে একজন। বিষধর সাপের কামড়ে বেঁচে গেলেও বিভিন্ন ধরনের পঙ্গুত্ব ও মানসিক সমস্যায় ভোগেন অনেকে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ‘ওরিয়েন্টেশন স্নেক বাইট ম্যানেজমেন্ট’ অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে এসব তথ্য জানায়।

অসচেতন ও দরিদ্র গ্রামবাসী সাধারণত এই সাপের কামড়ের শিকার হয়ে থাকেন। নাগালে সময়মতো প্রতিষেধক ও আধুনিক চিকিত্সা না পাওয়ায়, সনাতন পদ্ধতিতে চিকিত্সা করাতে গিয়ে দেরি করে ফেলেন। পরে হাসপাতালে নিলেও রোগী বাঁচানো সম্ভব হয় না। সাপে কাটার চিকিত্সায় বিষক্রিয়া দূর করতে বা কমাতে দ্রুত চিকিত্সার প্রয়োজন হয়।

আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সাপের কামড়ের বিষয়টিকে এখন তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সংস্থাটি বলছে সাপের দংশন থেকে যেসব জটিলতা তৈরি হয়, তা বিচার করলে দেখা যায়, সাপে কামড়ানোর বিষয়টি ট্রপিকাল এলাকার রোগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উপেক্ষিত একটি স্বাস্থ্যঝুঁকি। প্রতি বছর পৃথিবীতে ৮১ হাজার থেকে ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়। প্রায় তিন গুণ মানুষ প্রাণে বেঁচে যান কিন্তু সাপের কামড় থেকে স্থায়ীভাবে তারা নানা কারণে পঙ্গু হয়ে যান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাপে কাটা বা কামড়ের প্রাথমিক চিকিত্সা সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার। পাশাপাশি চিকিত্সকদের বৈজ্ঞানিক চিকিত্সার সঙ্গে পরিচিত করার মাধ্যমে এই মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। তারা বলছেন, বিষধর সাপ দংশনের পর বেঁচে যাওয়া অনেকে বিভিন্ন ধরনের পঙ্গুত্ব ও মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন। সাপের কামড় সম্পর্কে মানুষের মধ্যে অবৈজ্ঞানিক ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। দেশে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে সাপে কামড়ানোর ঘটনা ঘটলেও বিজ্ঞানসম্মত চিকিত্সার চর্চা এখনো ব্যাপকভাবে শুরু হয়নি।

দেশে সাধারণত পাঁচ ধরনের বিষধর সাপ রয়েছে। এগুলো হলো—গোখরা, কেউটে, চন্দ্রবোড়া, সবুজ সাপ ও সামুদ্রিক সাপ। সাপের কামড়ের চিকিত্সা নীতিমালা-২০১৯ অনুযায়ী অ্যান্টি স্নেকভেনম আনুষঙ্গিক চিকিত্সা, কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা অনুসরণ করা হয়ে থাকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টি স্নেকভেনম ও অন্যান্য ওষুধ সরবরাহ করা হয়।

ডা. আরিফুল বাশার শিমুল বলেন, সাপের কামড় একটি অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা। এটি একটি জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যা। বাংলাদেশের গ্রামগুলোয় প্রায়শই এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশের সর্বশেষ ২০১০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর আনুমানিক ৬ লাখ মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হন এবং ৬ হাজার মানুষ মারা যান।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।