• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
করোনায় মৃত্যু কমে যাওয়ার কারণ জানালেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা

ছবি প্রতিকী

নভেল করোনাভাইরাস আগের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করছেন অনেকে। নতুন এ ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যাও কমছে বেলে খবর প্রকাশ হচ্ছে।

এর কারণ ব্যাখ্যায় ভারতীয় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কুণাল সরকার জানান, কয়েকটা ঘটনা দেখে এই বিষয়টি জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। তবে মহামারির ইতিহাস পড়লে জানা যায় যে কয়েক মাস দাপিয়ে মানুষকে আক্রমণ করার পর জীবাণুদের মারাত্মক ক্ষমতার সঙ্গে আমাদের শরীর কিছুটা আপস করে নেওয়ায় মৃত্যুর হার কমে।

তবে তিনি বলেন, মহামারি সৃষ্টিকারী ভাইরাসের ক্ষমতাকে খাটো করে দেখলে নিয়ম-কানুন ডকে তুলে দিতে হবে।

ভারতের ফুসফুস বিশেষজ্ঞ অশোক সেনগুপ্ত বেলেন, এখনই কোভিড-১৯ ভাইরাসের ক্ষমতা যাচাই করার সময় আসেনি। আরো সপ্তাহখানেক গেলে ব্যাপারটা সম্পর্কে কিছুটা আঁচ পাওয়া যেতে পারে।

তিনি বলেন, মার্চ-এপ্রিল মাসে কোভিড-১৯ নামে সদ্য চেনা ভাইরাসকে নিয়ে আমরা চিকিৎসকরা যে রকম দিশাহারা ছিলাম, এখন সেই পরিস্থিতি আর নেই।

ভাইরাসটির চরিত্রের মারাত্মক দিক ফুসফুসকে বিকল করে দেওয়া, তাই সংক্রমণের শুরুর দিকে ভেন্টিলেটরে ভরসা করা ছাড়া আমাদের হাতে বিশেষ কোনো অস্ত্র ছিল না।
এ ভাইরাসের আক্রমণে মৃতদের শ্বাস জালিকায় রক্ত জমাট বাঁধার ব্যাপারটা জানার পর আক্রান্তকে রক্ত তরল করার ওষুধ দিয়ে শ্বাস কষ্টের সমস্যা অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা যাচ্ছে বলে জানান অশোক সেনগুপ্ত।

ভারতের ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ‘যাদের অন্যান্য ক্রনিক অসুখ নেই এবং বয়স কম, তাদের কোভিড-১৯ সংক্রমণের উপসর্গ হিসেবে জ্বর, কাশি ও অল্প গা, হাত, পা ব্যথার সমস্যা হতে পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, করোনাকে আমরা হালকাভাবে নেব’।

তিনি বলেন, ভাইরাস ক্ষমতা হারাচ্ছে কি না তা নিশ্চিত ভাবে বলার আগে অনেক গবেষণা ও তথ্য বিশ্লেষণ করা আবশ্যক বলে মনে করেন অরিন্দম বাবু।

এ চিকিৎসক সাবধান করে বলেন, এখনই ভাইরাসের ক্ষমতা কমে গেছে বললে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা তৈরি হবে। এতে সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

অরিন্দম বিশ্বাস জানান, ‘যাদের কো-মর্বিডিটি অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, ক্রনিক কিডনির অসুখ বা হার্টের অসুখ আছে এবং বয়স ৬০ বছরের বেশি, তাদের এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে এবং প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে। ’

কুণাল সরকার জানান, বিগত এক হাজার বছরে যত অতিমারি বা মহামারি হয়েছে, প্রথমদিকে তার ভয়ানক দাপট বজায় থাকে, মানুষও মারা পড়ে। কিন্তু ধীরে ধীরে ভাইরাস কিছুটা কমজোর হয়ে পড়ে, আবার মানুষের শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে কিছুটা প্রতিরোধ তৈরি করে। যদিও এখনও এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলার সময় আসেনি। তবে হয়ত নভেল করোনাভাইরাস সেই পর্যায়ে পৌঁছাতে চলেছে।

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির শুরুতে চিকিৎসকরা কী করবেন বুঝে ওঠার আগেই হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছিলেন ও মারা পড়ছিলেন। সেই ব্যাপারটা অনেকাংশে কমেছে। ভাইরাসকে দমিয়ে রাখার কিছু অস্ত্রশস্ত্র আমাদের হাতে এসেছে। একই সঙ্গে ভাইরাসও বদলে ফেলছে নিজেদের চরিত্র। ’

অরিন্দম বিশ্বাস জানান, ‘করোনা সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। ফলে অল্প উপসর্গ দেখা গেলেই মানুষ চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। এ ছাড়া মাস্ক ব্যবহারের কারণে ভাইরাস লোড কম থাকায় বেশ কিছু মানুষের উপসর্গ আর পাঁচটা ভাইরাল ফিভারের থেকে বিশেষ বাড়ছে না। ’

তবে চিকিৎসকরা এ বিষয়ে একমত যে, ভাইরাসের ক্ষমতা কমেছে বলে মাস্ক না পরে যত্রতত্র যাওয়া বা ভিড় বাড়ানো একেবারেই অনুচিত। সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার ও নিয়ম মেনে মাস্ক পরার মতো স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললে নভেল করোনাভাইরাস ছাড়াও অন্যান্য সংক্রমণ প্রতিরোধ  সহজ হবে। সূত্র: আনন্দবাজার।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

ডিসেম্বর ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« নভেম্বর    
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।