নিরঞ্জন মিত্র ( নিরু)(ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি)
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) অধীনে সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (সগবি), এবং আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট) এর উদ্যোগে গত (১৪ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে মসুরের স্টেমফাইলিয়াম ব্লাইট রোগ দমনে স্টেমপেডিয়া মডেল ভিত্তিক ছত্রাকনাশক প্রয়োগের কার্যকারিতার উপর কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গাজীপুর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (বারি) এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহা. সহিদুজ্জামান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মনোজিত কুমার মল্লিক।
বিশেষ অতিথির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সিনিয়ন আন্তর্জাতিক কনসালটেন্ট এর বিজ্ঞানী এবং সিমিট ড. মইন উস সালাম, গাজীপুর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (বারি) এর প্রাক্তন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আককাছ আলী, ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. হজরত আলী।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (বারি) এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ড. সেলিম আহম্মেদ, মসলা গবেষণা উপকেন্দ্র উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলাউদ্দিন খান, সিমিট হাব কো-অর্ডিনেটর কৃষিবিদ হিরা লাল নাথ, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন মিয়া, মসলা গবেষণা উপকেন্দ্র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মুশফিকুর রহমানসহ সিমিট বাংলাদেশের দুইজন গবেষক ফয়সাল ও কেএম জসিম উদ্দীন।
প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে মোট ৩০ জন কৃষক ও কৃষাণী অংশগ্রহন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট বৈজ্ঞানিক সহকারী, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মী।
কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালণা করেন ফরিদপুর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (বারি) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ.এফ.এম. রুহুল কুদ্দুস।
কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কারিগরী পর্বে পাওয়ার পয়েন্ট এর মাধ্যমে তাত্ত্বিক উপস্থাপনা দেখানো হয়।
মসুরের প্রধান ও সবচেয়ে ক্ষতিকর রোগ পাতা ঝলসানো বা স্টেমফাইলিয়াম ব্লাইট রোগ দমনে প্রচলিত রাসায়নিক পদ্ধতি হলো উপযুক্ত ছত্রাকনাশক (সিকিউর/রোভরাল/ফলিকুর) এর সঠিক মিশ্রণ ফুল আসার পর থেকে ৭ দিন অন্তর অন্তর তিন থেকে চারবার স্প্রে করা। এই প্রচলিত পদ্ধতিকে ক্যালেন্ডার ভিত্তিক স্প্রে বলা হয়। স্টেমপেডিয়া মডেল ভিত্তিক ছত্রাকনাশক প্রয়োগের উদ্দেশ্য হলো সংশ্লিষ্ট এলাকার দৈনিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ করে স্প্রের পরিমাণ নির্ধারণ করা। এক্ষেত্রে, সগবি ও সিমিট ফরিদপুরের বাস্তবায়নে যে গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছিল সেখানে মডেলভিত্তিক স্প্রের সংখ্যা ছিল ১-৩ বার। অতএব, মডেল ব্যবহার করে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা গেলে একদিকে যেমন ছত্রাকনাশকের অপচয় কম হয় আবার অন্যদিকে কৃষকও আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে।
বক্তব্য প্রদান শেষে প্রশ্ন উত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। কৃষকেরা পাতা ঝলসানো রোগ দমনে প্রচলিত ক্যালেন্ডার ভিত্তিক ছত্রাকনাশক প্রয়োগের পরিবর্তে স্টেমপেডিয়া মডেল ভিত্তিক প্রযুক্তিকে গ্রহন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।