• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই মে, ২০২৪ ইং
নওগাঁয় আত্রাইয়ের বাঁধ ভেঙ্গে ভাসছে মান্দার জনপদ

নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীর ডান তীরে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারস্থান ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জোতবাজার-আত্রাই সড়কের মাত্র ৬ কিলোমিটারের মধ্যে ভাঙনকৃত এসব চারস্থান দিয়ে একই এলাকায় হু-হু করে প্রবেশ করছে পানি। বুধবার বিকেল থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এসব স্থান ভেঙে অন্তত: অর্ধশতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকার বানভাসি মানুষ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে বিভিন্ন সড়ক ও উঁচু স্থানে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে খোলা হয়েছে দুটি আশ্রয় কেন্দ্র।

সংশ্লিস্ট সুত্র জানায়, আত্রাই নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃষ্টি পাওয়ায় আটটি বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এরপর পানির প্রবল চাপ এসে পড়ে মুল বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে। এতে আত্রাই ও ফকির্ণি নদীর অন্তত: ৫০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলো টিকিয়ে রাখতে বাঁধে পাহারা বসিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দিনরাত কাজ শুরু করে স্থানীয়রা। এ অবস্থায় বুধবার বিকেলে জোতবাজার-আত্রাই রাস্তার দাসপাড়া নামকস্থানে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়। এর কিছু পরেই ভেঙে যায় জোকাহাটে মোবাইলফোন টাওয়ারের কাছে। রাত ৮ টার দিকে ভেঙে যায় একই বাঁধের চকরামপুর এলাকা। শেষে রাত ৩টার দিকে পারনুরুল্লাবাদ বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গিয়ে একই এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করে।

বন্যার পানিতে মান্দা উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, কর্ণভাগ, শহরবাড়ী, ক্ষুদ্র বান্দাইখাড়া, পারশিমলা, নহলা কালুপাড়া, আবিদ্যপাড়া, যশোপাড়া, পশ্চিম দুর্গাপুর, শিবপুর, চককামদেব, ভরট্ট শিবনগর ও দাসপাড়া, নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের পারনুরুল্লাবাদ, মন্ডলপাড়া, নিখিরাপাড়া, বাকশাবাড়ি, চকহরি নারায়ন ও শাহানাপাড়া এবং কশব ইউনিয়নের বনকুড়া ও দক্ষিণ চকবালু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বন্যাকবলিত হয়েছে আত্রাই উপজেলার হাটকালুপাড়া, কালিকাপুর ও আসহানগঞ্জ ইউনিয়ন এবং বাগমারা উপজেলার বড়বিহানালী ইউনিয়নের মানুষ।

বৃহস্পতিবার বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আশ্রয়ে সন্ধানে ছুটছে দুর্গত এলাকার মানুষ। অনেকে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। দুর্গত এলাকার মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে গবাদিপশু নিয়ে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাসপাড়া ডিগ্রি কলেজ ও চককামদেব বালিকা বিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। অন্যদিকে তলিয়ে গেছে বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুরের মাছ।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মান্দা এরিয়া অফিসের ডিজিএম আসাদুজ্জামান জানান, ‘দুর্ঘটনা এড়াতে বন্যাকবলিত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ সাময়িক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পানির প্রবল তোড়ে বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটিতে সমস্য দেখা দিয়েছে। যা নিয়ে কাজ করছে অত্র অফিসের লোকজন। পরিস্থিতির উন্নতি হলে বিদ্যুৎ সংযোগ আবার স্বাভাবিক হবে।’

মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় ইতোমধ্যে দুটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলাসহ বানভাসি মানুষের তালিকা তৈরি করতে সংশ্লিস্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দুর্গত ৫শ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে।

সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক এমপি জানান, দুযোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালককে মান্দার বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই দুর্গত মানুষদের সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।