ফরিদপুর বোয়ালমারীর ডোবরা-আল-গফুরিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় সরকারের বরাদ্দকৃত এতিম শিশুদের জন্য ক্যাপিটেশন গ্রান্ড ফান্ডের অর্থ আত্মসাত, দূনীর্তি ও অনিয়মের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানে প্রিন্সিপাল শাহ্ মুহাম্মদ খালিদ-বিন-নাসেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯ইং তারিখে ফরিদপুর ৭নং আমলি আদালতে বিচারক জিএম নাজমুল শাহদাতের কাছে স্থানীয় খন্দকার সাজ্জাদ হোসেন সান্ত নামের এক ব্যক্তি মামলাটি দায়ের করেন। পরবতীতে মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা পিবিআই পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। মামলাটির তদন্ত শেষে পিবিআই পুলিশের এসআই মুজিদ হোসেন আদালতে সম্প্রতি র্চাজশীট দাখিল করেন।
অভিযোগ বলা হয় ডোবরা দরবার শরীফের এতিমখানায় এতিমদের ভুয়া তালিকা করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল ও এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মুহাম্মদ খালিদ-বিন-নাসের। ডোবরা-আল-গফুরিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি সরকারিভাবে নিবন্ধিত। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮/১৯ অর্থ বছরে ৪৩জন এতিমের নামে দুই কিস্তিতে ৫লক্ষ ১৬ হাজার টাকা উত্তোলন করেছে। এছাড়াও গত ২০১৩ সাল থেকে একই রুপে সরকারি ও বেসরকারি অনুদানের অর্থ একই ভাবে আত্নসাৎ করছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান।
কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৪৩ জন এতিম শিশুর মধ্যে ২৬জনের পিতা-মাতা জীবিত রয়েছে। গত ২৯ আগস্ট জেলা সমাজসেবা দপ্তরের উপ-পরিচালক, ফরিদপুর বরাবর এ বিষয়ে মো. আমীর হোসেন গরীবসহ ৯জন একটি লিখিত অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
আমীর হোসেন বলেন, ৪৩জন সুবিধাপ্রাপ্ত এতিমের মধ্যে ২৬জনের পিতা-মাতা জীবিত, যা প্রমানপত্রসহ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে অভিযোগ দাখিল করি।
এ বিষয়ে জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক এসএম আলী আহসান। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে প্রতিষ্ঠানটির অর্থ লেনদেনের গড়মিল পাওয়া গেছে।
বোয়ালমারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রকাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি জানতে পেরেছি এতিমখানাটি ভুয়া নাম-তালিকা দিয়ে অর্থ বরাদ্দ নিয়েছে, এ বিষয়ে জেলা সমাজ সেবা কার্যালয় থেকে তদন্ত করার জন্য একটি চিঠি পেয়েছি। অচিরেই এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করা হবে।
সাতৈর ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। যা ডোবরা দরবার শরীফের সম্মানকে ক্ষুন্ন করেছে। আমি আশা করি যথাযথ কর্তৃপক্ষ তদন্ত পুর্বক এতিমদের অর্থ আত্মাসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হলে দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
গত রবিবার পুলিশ ডোবরা-আল-গফুরিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় প্রিন্সিপাল শাহ্ মুহাম্মদ খালিদ-বিন-নাসেরকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।