মানিক কুমার দাস,ফরিদপুর প্রতিনিধি :
পঁচা ও নিম্নমানের অভিযোগে ফরিদপুরের নগরকান্দা খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষের গ্রহন না করা ৬০ মেট্রিক টন চাল খাওয়ার অনুপোযুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন গঠিত তদন্ত কমিটি। ওই কমিটির রিপোর্টে বলা হয়, গুদামের খামালের পার্শ্বের সারির চালগুলো কিছুটা ঘোলাটে থাকলেও ভিতরের চালগুলো ভালো এবং তা খাওয়ার অনুপোযুক্ত নয়। ওই খামালের বয়স আট মাস হওয়ায় পাশের সারির কিছু চাল সামান্য ঘোলাটে আকার ধারণ করেছে বলে উল্লেখ করেন তদন্ত কমিটি। রিপোর্টে চাল গ্রহন না করায় সরকার আর্থিক ক্ষতির স্বীকার হয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
শনিবার ফরিদপুরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, গত ০৬, ০৭ ও ০৮ জুলাই মধুখালী খাদ্য গুদাম থেকে তিনটি ট্রাকে ৬০ টন চাউল জায়গা সংকুলান না হওয়ায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নগরকান্দা খাদ্যগুদামে মজুত রাখার উদ্ধেশ্যে পাঠানো হয়। নগরকান্দা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলী আজহার ওই চাল নিম্নমানের ও ব্যবহার অযোগ্য দাবী করে তা গ্রহনে অস্বীকৃতি জানালে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন স্থাণীয়রা। এঘটনায় সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তারিকুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির তদন্ত করে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করেন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ওই চাল খাওয়ার অনুপোযোগী নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নগরকান্দা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলী আজহার জানান, নিম্নমানের চাল প্রদান করায় আমি তা গ্রহন করিনি, বিষয়টি উর্দ্ধতনদের জানানোর পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রিপোর্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চালগুলো খাওয়ার অনুপোযুক্ত আমি বলিনি, বলেছিলাম নিম্নমানের, অর্থাৎ চালগুলো যে মানের থাকার কথা ছিলো সেই মানের ছিলোনা।
আর মধুখালী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম নাজমুল হক নিম্নমানের কোনো চাল সরবরাহ করা হয়নি জানিয়ে বলেন, ওই চালগুলো আটমাস ধরে গুদামজাত থাকায় খামালের পাশের সারির চালগুলো হালকা ঘোলা বর্ণ ধারণ করেছে, যা প্রতিটি গুদামেই হয়ে থাকে। এই চালকে নিম্নমানের বলার সুযোগ নেই। যা তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও উল্লেখ রয়েছে। চালগুলো খাওয়ার উপযোগী বলেও জানান তিনি। তিনি দাবী করেন, এ বছরেরই এপ্রিল মাসে নগরকান্দা খাদ্য গুদাম থেকে প্রায় ৪০ মেট্রিক টন চাল মধুখালীর গুদামে পাঠানো হয়েছিলো, ওই চালগুলো ভারত থেকে আমদানীকৃত ভালো মানের হওয়ার কথা থাকলেও কারসাজি করে দেশী বোরো চাল সরবরাহ করে নগরকান্দা খাদ্য গুদামের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। ওই চালগুলো ছিলো ঘোলা ও পোকাযুক্ত। বিষয়টি ওই সময়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিলো। এতেই ক্ষুব্দ হয়ে নগরকান্দার গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো : আলী আজহার প্রতিশোধ নিতেই তিনি ভালো মানের চালকে নিম্নমানের বলে থাকতে পারেন বলে দাবী করেন মধুখালী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম নাজমুল হক।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন জানান, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে প্রকৃত বিষয় উঠে এসেছে, এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে তদন্ত রিপোর্ট সরবরাহ করা হয়েছে।