• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই মে, ২০২৪ ইং
সালথায় সংঘর্ষের ঘটনায় আটক-১৫: বাড়িঘর ভাংচুর

মনির মোল্যা, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:

ফরিদপুরের সালথায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে আরো বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকার নারী ও শিশুরা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। সংঘর্ষের সময় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আর মারিজ নিহতের ঘটনায় আরেকটি হত্যা মামলা প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

এদিকে রবিবার সকালে সরেজমিনে উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সংঘর্ষে নিহত মারিজ শিকদারের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ৯ ভাই-বোনের মধ্যে মারিজ ছিল মেজো। তার স্ত্রীর নাম জুই আকতার। মুসলিমা ইসলাম নামে তাদের মাত্র দুই বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সবাই শোকে পাথর হয়ে মিরাজের লাশের উপেক্ষায় বসে বসে কান্নাকাটি করছে। বিকালে পারিবারিক কবরস্থানে নিহতের লাশ দাফন করার কথা রয়েছে।

মারিজের বোন শিল্পী আকতার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, মারিজ অন্যের জমিতে কাজ করে তার ছোট্ট সংসার চালাতেন। এখন কিভাবে চলবে ওর সংসার। কে দেখবে ওর স্ত্রী-সন্তানকে। অকালে এভাবে আমার ভাইয়ের হত্যার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিনা। আমি আমার ভাই হত্যার সঠিক বিচার চাই।

অপরদিকে সংঘর্ষে মারিজ নিহত ঘটনায় খারদিয়া এলাকায় একাধিক বাড়িঘরে ব্যাপক তা-ব চালানোর চিত্র দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান, মারিজের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে যাওয়ার পর সংঘর্ষ শেষে সরকার দলীয় প্রার্থীর পুরুষ সমর্থকরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এই সুযোগে শনিবার সারারাত ও রবিবার সকালে তাদের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা চালানো হয়। ভাংচুর করা হয় যদুনন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলমগীর মিয়া, সংসদ উপনেতার সাবেক এপিএস আবু বক্কর সিদ্দিকী, ইউপি সদস্য ইমরুল খান ও তোরাপ হোসেনের বাড়িঘরসহ অন্তত ৭০ থেকে ৮০টি বসতঘর। গুড়িয়ে দেওয়া হয় এসব ঘরে থাকা আসবাবপত্র। লুটপাট করা হয় গরু-ছাগলসহ মালামাল। বর্তমানে ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে সময় পার করছে এসব বাড়ির নারী ও শিশুরা।

তবে আ.লীগ মনোনীত আব্দুর রব মোল্লা, বিদ্রহী প্রার্থী রফিক মোল্লা, নুরুজ্জামান টুকু ঠাকুর ও যদুনন্দী ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক আলমগীর মিয়ার কাছে সংঘর্ষের বিষয় বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিবার ফোন করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান বলেন, শনিবার বিকালে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। সংঘর্ষের সময় পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মোট ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, এলাকায় উত্তেজনা চলছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আ.লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্লা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তার বিপরীতে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন ইউনিয়ন আ.লীগ কর্মী গ্রাম্য মাতবর মো. রফিক মোল্লা ও উপজেলা আ.লীগের সদস্য নুরজ্জামান ওরফে টুকু ঠাকুর। রফিক মোল্লা ও নুরজ্জামান টুকু ঠাকুর খারদিয়া এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে একই দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। তাদের বাড়িও একই গ্রামে। গত এক মাস আগে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে বিরোধ জেরধরে রফিকের কাছ থেকে আলাদা হয়ে নুরজ্জামান টুকু ঠাকুর নৌকার মনোনীত প্রার্থী রব মোল্লা ও তার সমর্থক ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর মিয়ার দলে যোগ দেন। এরই জেরধরে শনিবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খারদিয়া এলাকায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মারিজ সিকদার নামে একজন নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ৩০ জন।

২৪ অক্টোবর ২০২১

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।