• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা মে, ২০২৪ ইং
এই ভিটামিনের অভাবেই শরীরে বাসা বাঁধছে করোনা

ছবি প্রতিকী

কোরনাভাইরাস বারবার নিজের জিনগত মিউটেশন ঘটিয়েই চলেছে। সেই কারণেই এর বৈশিষ্ট্যগত পিরবর্তন দেখা দিচ্ছে। আর সেই কারণেই বিলম্বিত হচ্ছে এর উপযুক্ত প্রতিষেধকের আবিষ্কার। বিশ্বের নানা প্রান্তের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা প্রতিনিয়ত এই ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন। আর সেই গবেষণায় প্রতিদিনই বিজ্ঞানীদের সামনে উঠে আসছে নিত্য নতুন তথ্য। অতি সম্প্রতি ইজরায়েলের একদল গবেষক তাঁদের গবেষণায় জানতে পরেছেন, রক্তে ভিটামিন-ডি পরিমাণ কম থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ভিটামিন-ডির কার্যকারিতা যেহেতু মানবশরীরে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত, তাই দীর্ঘদিন থেকেই কোভিড গবেষণায় এই বিষয়েও উঠে আসছিল নানা তথ্য।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, শরীরের হাড়ের শক্তি বৃদ্ধির অন্যতম কাণ্ডারি এবার করোনা সংক্রমণের ঠেকাতে বড়সড় ভূমিকা নিচ্ছে। যাদের শরীরে ভিটামিন-ডি-র ঘাটতি বেশি তারাই বেশি পরিমাণে করোনা কবলে পড়ছেন বলে এই নয়া গবেষণায় জানা যাচ্ছে।

ভিটামিন ডি হলো এমন একটি  ভিটামিন যা সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে আমাদের ত্বকে উৎপাদিত হয়। এই ভিটামিন আমাদের শরীরে হাড়, দাঁত ও পেশি সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

ইজরায়েলের গবেষকার বলছেন, “আমরা করোনাভাইরাস রোগের সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা নিয়ে লো প্লাজমা ভিটামিন ডি স্তরের  মূল্যায়ন করতে চেয়েছিলাম।” এফইবিএস জার্নালে প্রকাশিত তাঁদের এই সমীক্ষার রিপোর্ট থেকে জানা গেছে যে, গবেষকরা ৭০৮৭ জন মানুষের রক্তে করোনা ও ভিটামিন ডি সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালিয়েছেন।

ইউশিকাগো মেডিসিন নামক ওই সংস্থার তরফে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সংক্রামিত হওয়ার এক বছর আগে পর্যন্ত শরীরে ভিটামিন-ডি-এর পরিমাণ যাচাই করতে সমীক্ষা চালানো হয়। দেখা যায়, যাদের শরীরে ভিটামিন-ডি-এর অভাব ছিল, তারা অন্যান্য মানুষদের থেকে দ্বিগুন তাড়াতাড়ি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।

ইউশিকাগো মেডিসিনের তরফে সমীক্ষার প্রধান ডেভিড মেল্টজার জানিয়েছেন, ইতিপূর্বে শ্বাসযন্ত্রে ভাইরাস সংক্রমণ কমানোর ক্ষেত্রে ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট-এর যে ভূমিকা রয়েছে, তা ফের একবার প্রমাণিত হয়েছে।

গবেষণায় উঠে এসেছে, রক্তে ভিটামিন-ডি পরিমাণ কম থাকলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, মোট ৭৮০৭ জন রোগীর মধ্যে ১০.১ শতাংশ অর্থাৎ ৭৮২ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। বাকি ৮৯.৯ শতাংশ অর্থআৎ ৭০২৫ জন রোগীর রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, করোনা পজিটিভ রোগীদের রক্তরসে ভিটামিন-ডি পরিমাণ করোনা নেগেটিভ রোগীদের রক্তরসে উপস্থিত ভিটামিন-ডি পরিমাণের তুলনায় অনেকটাই কম ছিল।

মে মাসে প্রকাশিত এজিং ক্লিনিক্যাল এন্ড এক্সপেরিমেন্টাল রিসার্চ নামক একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দাবি করা হয় , ভিটামিন-ডির ঘাটতি বাড়লে কোভিড আক্রান্তদের মৃত্যুহারও বাড়ছে। পাশাপাশি এক্ষেত্রে সর্বাধিক বয়স্করাই ভুগছেন বলে জানাচ্ছে ওই গবেষণা। বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তর ইউরোপের স্পেন ও ইতালির বসবাসকারীদের মধ্যে ভিটামিন-ডির পরিমাণ কম থাকায় সেখানে মৃত্যুহার অধিক।

চিকিৎসকদের মতে, শরীরে ভিটামিন-ডির উপস্থিতি শ্বেতরক্তকণিকাদের অতিরিক্ত সাইটোকিন ও প্রোটিন গঠনে বাধা দেয়। এই সাইটোকিন শরীরে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতাকে জাগিয়ে তোলে। তবে এই প্রোটিনের অত্যধিক পরিমাণ উপস্থিতি দেহে প্রদাহের সৃষ্টি করে, যা রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতাকে উল্টে ব্যাহত করে। ফলত শরীরে ভিটামিন-ডির পরিমাণ মাত্রা মেপে থাকা উচিত।

চিকিৎসকদের মতে, শরীরে ভিটামিন ডি-র পরিমাপ ঠিক রাখতে  গেলে আগেই দরকার ২৫-হাইড্রক্সি ভিটামিন-ডি পরীক্ষা। এক্ষেত্রে রক্তে ভিটামিনের সঠিক পরিমাণ বজায় রাখতে প্রতিদিন ১০-২০ মাইক্রোগ্রামের বেশি ভিটামিন-ডি খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু রক্তের অস্বভাবিকত্বের কারণে চিকিৎসকরা প্রতিদিন ২৫-১০০ মাইক্রোগ্রামের ডোজও দিয়ে থাকেন।

শরীরে ভিটামিন-ডির স্থায়িত্ব বজায় রাখতে সাপ্লিমেন্ট-এর পাশাপাশি মাছের যকৃতের তেল, ডিমের কুসুম খাওয়া ও শরীরে রোদ লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।