রাজশাহীর বাঘায় নানা অনিয়ম ও অব্যাবস্থাপনায় চলছে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র
মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল, রাজশাহী : রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়ন মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। বছরের প্রায় সময়ই এ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকে। সংশিষ্টদের দায়িত্বহীনতার কারণে কল্যাণ কেন্দ্রটি থেকে স্থানীয়রা কোন সুবিধা নিতে পারছে না বলে অভিযোগ তুলেছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা নিয়মিতভাবে চললেও বর্তমানে কল্যাণ কেন্দ্রটি অবহেলা ও অযত্নে নোংরা পরিবেশে দায়সারাভাবে কার্যক্রম চলে আসছে। প্রায় সময়ই কল্যাণ কেন্দ্রটি তালাবদ্ধ পড়ে থাকে। সপ্তাহে দুই একদিনও সঠিকভাবে সেবা পায়না বলে জানিয়েছেন এখানখার ভুক্তভোগী রা। এ পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ফার্মাসিষ্ট পদে ইমতিয়াজ উদ্দিন, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (ভিজিটর) মুঞ্জুরা আকতার ও আয়া পদে (অস্থায়ী) তারা বিবি কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ফার্মাসিস্ট ইমতিয়াজের বিরদ্ধে অনিয়মিত উপস্থিতি ও দায়সারা কর্তব্য পালন করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। বর্তমানে কল্যাণ কেন্দ্রটির সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পরিবার কেন্দ্রের সামনে সেবা গ্রহণকারী ৮-১০ জন নারী-পুরুষ সেবা গ্রহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। তাদের মধ্যে ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের মুজিবর, বিলপাড়া গ্রামের ছমিরন কিশোরপুর গ্রামের রাহেলা, সহ আরও অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত্র পরামর্শ গ্রহন করতে। কিন্তু সেবাকেন্দ্রে কাউকে না পেয়ে তারা নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে চলে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে ফার্মাসিস্ট ইমতিয়াজ বলেন, আজ প্রথম রমজান । তাই স্যার কে সকালে মোবাইলে ফোন দিয়ে ছুটি চেয়েছি। আগামিকাল অফিসে যাব।এ ব্যাপারে (ভিজিটর) মুঞ্জুরা আক্তার মুঠোফোনে জানান, তিনি ৩টি ইউনিয়নে দায়িত্ব পালন করছেন। তাই সপ্তাহে প্রতি রবি, সোম ও বুধবার এখানে দায়িত্ব পালন করেন। শনিবার অফিসের কাজে তিনি মনিগ্রাম স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ছিলেন। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাফিউন নাহার নিপা বলেন, পাকুড়িয়া ইউনিয়ন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি নিয়মিত পরিচালনার জন্য ডাঃ শাহিন আলম দায়িত্বে আছেন। আপনি উনার সঙ্গে কথা বলেন।
পরে ডাঃ শাহিন আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আজ ১লা রমজান। সকাল ৮ টার সময় ফার্মাসিষ্ট ইমতিয়াজ মুঠোফোনে তার অসুস্থতার কথা জানিয়ে মৌখিক ভাবে ছুটি প্রার্থনা করেন। এ বিষয়ে তিনি লিখিত কোন ছুটি চান নাই।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়্যারম্যান ও সেবা কেন্দ্রের সভাপতি মেরাজ সরকার জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন গ্রাম গঞ্জের প্রান্তীক এলাকার জন সাধারনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, ডাক্তারদের দায়িত্ব শিলতার সঙ্গে চিকিৎসাসেবা দিতে কঠোর ভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন ঠিক তখন এই মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে দায়িত্বরত ফার্মাসিষ্ট ইমতিয়াজ দিনের পর দিন অফিস ফাঁকি দিয়ে ইচ্ছেমত অফিস করছেন। তার অফিস ফাঁকি দেওয়ার বিষয়ে এর আগে ডিডি( ডেপুটি ডিরেক্টর) শামিমা আক্তার এরিন নিজে এসে তদন্ত করে গেছেন। তবুও তার অফিস ফাঁকি দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। এই এলাকার জনগনের স্বাস্থ্য সেবা সিশ্চিত করতে খুব দ্রুত সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া উচিৎ ও প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।