শুধুই সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে দু’টি হাত খুব ভাল ভাবে ধুয়ে নিলেই হবে না, করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাড়ির লোকজনকে বাঁচাতে বাইরে থেকে এসে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।
একটা বিষয় ভেবে দেখার, গড়পড়তা বাঙালিরই হাতের আঙুলে থাকে এক বা একাধিক আংটি। কারও বিয়ে বা উপনয়নে পাওয়া। অনেকে আবার জ্যতিষীর পরামর্শে আংটিতে ধারণ করেন থাকে নানা রকমের রত্ন, মণিমাণিক্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আংটিগুলি এই সময় খুলে রাখলেই সবচেয়ে ভাল। না পারলে, বাইরে থেকে এসেই সেগুলিকে খুব ভাল ভাবে ঘষে ঘষে ধুয়ে নিতে হবে।
আমাদের অনেকেরই হাতের কবজিতে থাকে নানা ধরনের তাগা, মাদুলি, তাবিজ, কবচও। সেগুলি আর রাখাই যাবে না সঙ্গে। সবই খুলে ফেলতে হবে। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুমিত সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘আংটি, তাগা, মাদুলি, তাবিজ, কবচ– সবই অত্যন্ত বিপজ্জনক। এগুলি থেকে বাড়ির লোকজনের করোনায় সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা যথেষ্টই। তাই এগুলির ব্যবহার সম্পর্কেও আমাদের খুব সতর্ক হতে হবে।’’
আংটি থেকে সাবধান!
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, নোভেল করোনাভাইরাস আংটির বিভিন্ন ধাতু, রত্ন, মণিমাণিক্যে কতটা সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে, সে ব্যাপারে সর্বজনগ্রাহ্য গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়নি, এ কথা ঠিক। কিন্তু সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকেই বলা যায়, ধাতব আংটিতে যথেষ্ট পরিমাণে জমে থাকে ধুলো ও বিভিন্ন ধরনের জীবাণু। যাঁরা গ্লাভস পরে বাড়ির বাইরে বেরচ্ছেন না, তাঁদের হাতের আঙুলে থাকা আংটিতে তাই এই পরিস্থিতিতে করোনার মতো জীবাণু ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা যথেষ্টই।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, ‘‘আংটির নীচে আকছারই সাবানের টুকরো জমে থাকতে দেখা যায়। স্নানের সময় আংটি আমরা ভাল ভাবে পরিষ্কার করি না বলে। বাড়ির বাইরে বের হলে আংটির নীচে এই জমে থাকা সাবানের টুকরোগুলিই হয়ে ওঠে জীবাণুদের সেরা আস্তানা। তাই সেই আংটি পরা হাতে আমরা যদি খাই বা বাড়ির লোকজনকে খাবার পরিবেশন করি বা রান্নাবান্না করি, তা হলে জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।’’
আর তাগা, তাবিজ, কবচ?
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুমিত সেনগুপ্তের বক্তব্য, এগুলি আপাতত আমাদের বর্জন করাই উচিত। কারণ, এগুলিতে তুলো থাকে। যাতে জীবাণু আটকে থাকার সম্ভাবনা খুবই। তাই এগুলিকে ধুলেও ততটা কাজ হয় না। সে জন্য বাড়ির লোকজনকে করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে হাতের কবজিতে বাঁধা তাগা, তাবিজ, মাদুলি, কবচ অবিলম্বে খুলে ফেলা উচিত।