• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
রোজায় তাকওয়া অর্জন

মুফতি মীযানুর রহমান সাঈদ

রহমতের বার্তা নিয়ে শুরু হলো মাহে রমজান। রমজানের মৌলিক আমল রোজা পালন। আর রোজার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর; যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত-১৮৩)
তাকওয়া অর্থ হলো, রোজাদারের অন্তরে আল্লাহর ভয়ভীতি থাকা। প্রত্যেক রোজাদার একমাত্র আল্লাহর জন্য রোজা রাখবেন; কোনো মানুষকে দেখানোর জন্য নয়। তাই প্রচণ্ড ক্ষুধায় কিংবা পানির পিপাসা লাগলেও, গোপনীয় পরিবেশ পেয়েও পানাহার করবে না এ ধারণায় যে, দুনিয়ার কেউ না দেখলেও আল্লাহ তো দেখছেন। অন্তরে এমন ভয়ের নামই তাকওয়া। হ্যাঁ, যে লোক চুরি করে রোজা ভাঙে, মানুষকে দেখায় যে সে রোজাদার, সে সাহরি করছে, ইফতার করছে, কিন্তু গোপনে পানাহার করে, সেটা ভিন্ন ব্যাপার। এর বিচার আল্লাহ অবশ্যই করবেন। কিন্তু রোজা রাখলে আল্লাহর ভয়ভীতির জন্যই রাখবেন, একনিষ্ঠ মনে পালন করবেন। আল্লাহতায়ালার যাবতীয় ইবাদতই একনিষ্ঠ মন নিয়ে করতে হয়। আল্লাহ বলেন, ‘তাদেরকে এ ছাড়া কোনো নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদাত করবে।’ (সুরা বাইয়্যিনাহ : আয়াত-৫)
একনিষ্ঠতার জন্য প্রথমে নিয়তকে বিশুদ্ধ রাখতে হবে। কারণ কোন উদ্দেশ্যে রোজা রাখা হবে তা যদি বিশুদ্ধ না হয় তা হলে রোজার উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। এজন্য আল্লাহর রাসুল (সা.) সমস্ত কাজকে নিয়তের ওপর নির্ভরশীল বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চয় সমস্ত আমলের ফলাফল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং প্রত্যেক মানুষ (পরকালে) তাই পাবে যা সে নিয়ত করবে।’ (বুখারি : হাদিস ৫২)
একনিষ্ঠতার সঙ্গে যতটুকু আমল করা হবে ততটুকুই আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে। হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা সমস্ত আমলের মধ্যে শুধু সেই আমলটুকুই কবুল করেন, যা ইখলাসের সঙ্গে শুধুমাত্র তার সন্তুষ্টির জন্যই করা হয়।’ (নাসায়ি : ৩১৪২)
কাকে খুশি করার জন্য রোজা রাখছি তা অন্তরেই থাকে। এজন্য আল্লাহতায়ালা মানুষের অন্তর দেখেন। বাহ্যিক আমল দেখেন না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তোমাদের বাহ্যিক আকার-আকৃতি এবং ধন-সম্পত্তির দিকে দৃষ্টিপাত করেন না, বরং তিনি দৃষ্টিপাত করেন শুধু তোমাদের অন্তর আমলের দিকে।’ (মুসলিম : হাদিস ৬৫৪৩)।
এজন্য আমল যদি একনিষ্ঠতার সঙ্গে হয় তা হলে আল্লাহতায়ালা তার পুরস্কারও দেবেন। হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা মুখলিসদেরকে (একনিষ্ঠতার সঙ্গে আমলকারীদেরকে) সুসংবাদ দাও। কেননা তারা অন্ধকারে প্রদীপস্বরূপ। তাদের দ্বারা সকল ফেতনার অন্ধকার দূর হয়ে যায়।’ (বায়হাকি : হাদিস ৩৪৩)
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, শায়খ জাকারিয়া রিসার্চ সেন্টার, বসন্ধুরা, ঢাকা

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মার্চ ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ফেব্রুয়ারি    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।