সুমন ভূইয়াঃ
একজন সাংবাদিক/সংবাদ-কর্মী প্রতিদিন যে কষ্ট করে তার বিনিময় কি পেয়ে থাকে।
১ একজন সাংবাদিকের সাথে একজন ক্যামেরা ম্যান,
২. একটি ল্যাপটপ
৩. একটি ক্যামেরা
৪. একটি মটর সাইকেল/গাড়ি
৫. একটি ইন্টারনেট মডেম তার পাশাপাশি এমবি
আসুন জেনে নেই প্রতিদিনের পরিশ্রম
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে সংবাদ সংগ্রহ করতে যায়, সারাদিন সংবাদ সংগ্রহ করেন।
কোথায় গোসল কোথায় ভাত কোথায় বিশ্রাম
সন্ধ্যার পর ল্যাপটপে নিয়ে বসে, তারপর সংবাদ ভালোভাবে সম্পাদন করেন।
সংবাদটি লিখেন, তারপর বাছাই করে কোথাও ভুল আছে কিনা। ভুল থাকলে সংশোধন করা। এর ফাকেঁ যদি আবার শুনা যায়, একটি দূর্ঘটনা কিংবা কোথাও কোন সমস্যা হয়েছে, তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌছানো।
আসুন আরো জেনে নেই।
একটি সংবাদ আসল ধরেন কোন একটি ঘটনা। এই ঘটনায় কত জন লোকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হয়।
প্রথমে বাদীর কথা, তারপর বিবাদীর কথা, তারপর এলাকাবাসির কথা, তারপর চেয়ারম্যান মেম্বারদের কথা, তারপর প্রশাসনের কথা।
এই সংবাদ তৈরি করতে কতজন লোকের নিকট যেতে হয়, আর কতটা কষ্ট অনুভব করতে হয়।
প্রত্যেক লোকের কাছে আলাদা আলাদাভাবে কথা বলে জানতে হয় বিষয়টির সম্পর্কে। এতে কতটুকু সময়ের প্রয়োজন।
এরপরে আসেন সংবাদটি পরিবেশন হয়েছে,
আসছে হুমকি দামকি এরপর মামলাও হতে পারে।
এখানে আমার প্রশ্ন, এগুলো কি সংবাদ কর্মীরা নিজের স্বার্থের জন্য করে, না মানুষের স্বার্থের জন্য।
বর্তমানে একজন লোকের বেতন কমপক্ষে, দশহাজার টাকা।
তাহলে সংবাদ-কর্মী আর ক্যামেরা ম্যানসহ দুইজনের বেতন কমপক্ষে মোট ২০হাজার টাকা।
এরপরে আসেন মটর সাইকেল প্রতিমাসে ৩০ লিটার পেট্রল, ৩ হাজার টাকা।
নেট বিল হতে পারে ২ হাজার টাকা।
চাঁ-নাস্তা হতে পারে ৬ হাজার টাকা।
তাতে মোট দুইজন ব্যক্তির প্রতিমাসে কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা প্রয়োজন।
এরপরে আসেন মিডিয়ার অফিস থেকে বেতন, শুধু সংবাদ-কর্মীর জন্য সামন্য কিছু বেতন পেয়ে থাকে, তা পকেট খরচ হিসেবে। এই বেতন দিয়ে কি পরিবার চলে।
এরমধ্যে যদি কেউ মনে করেন, ঘুষ খায় আসেন ঘুষের সম্পর্কে জেনে নেই। গ্রামগঞ্জের সংবাদ টাকা তো দুরের কথা একগ্লাস পানিও পায় না।
আসুন শহরের সংবাদ সরকারি অফিস আদালতের দূর্নীতি ধরা পড়লো, এখানে আসলো কোন ক্ষমতাসীন ব্যক্তির ফোন বা হুমকি সে আমার লোক।
এরমধ্যে কেউ যদি বলেন তাহলে চলে কিভাবে,
একজন সাংবাদিকের কাছে কি প্রতিদিন দূর্নীতির তথ্য আসে, আসতে পারে প্রতিমাসে একটি আবার দুইমাস পরেও একটি, কিন্তু তা প্রচার করবে কিভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়ার আগেই, কোন বড় ধরনের ব্যক্তির ফোনে আতংকিত হয়ে যায়।
তাহলে এতকষ্ট করার পর কেন সাংবাদিকেরা বেতন পাচ্ছেনা, ভাতা পাচ্ছেনা।
সাংবাদিকরা তো রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ। একজন শ্রমিক যদি প্রতিমাসে বেতন পেতে পারে, তাহলে একজন সাংবাদিক পাবে না কেন।
পরিশেষ কোন সংবাদ-কর্মী টাকার আশায় সাংবাদিকতা করে না, সম্মান আর মানুষের ভালোবাসার জন্য সাংবাদিকতা করেন। সত্য ঘটনা তুলে ধরা, অসহায় মানুষের কথা বলাই সাংবাদিকের দায়িত্ব।
দেশে যে সরকার ক্ষমতায় আসুক উন্নয়নের কথা কারা তুলে ধরেন, বিশ্বের কাছে সাংবাদিক না অন্যরা। দেশের প্রতিটা কাজেই সাংবাদিকদের অবদান রয়েছে এবং আছে থাকবে, যতদিন পৃথিবী আছে।
কিছু লোকের মুখে মাঝে মাঝে শুনতে পাই সাংবাদিকেরা চাঁদাবাজি করে।
এটা সম্পর্কে একটু জানি, কোন ব্যক্তি অপকর্ম করলে ১ হাজার টাকার উপরে কেউ ঘুষ দেয় না। তার আগেও নেতাদের হাত ধরে ফেলেন।
আর সাংবাদিকরা তো আপনাদের মতো গরিব অসহায়সহ সকল শ্রেনী পেশার মানুষের কথা তুলে ধরেন। যখনি দেখেন পাঁচ টাকা পকেটে মধ্যে ভরে দিচ্ছে, তখনি বলেন সাংবাদিক চাদাঁবাজি করছে। আর যারা দূর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, তাদেরকে কিছু বলতে পারছেন না। তাদেরকে বলতন কিভাবে তারা অনেক বড় লোক তাদের সাথে যুদ্ধ করে পারবেন না। আসলে সমান চোখে দেখুন।
একজন সংবাদ-কর্মী কতটা কষ্ট করে তা আপনি জানেন না। কখনো যদি জানতেন এইভাবে কথা বলতেন না। রোদ্র নেই বৃষ্টি নেই, পানি নেই ২৪ টি ঘন্টা গাধাঁর মতো খেটে থাকে।
কোন লোককে জীবনে দেখছেন, কোমড় সমান পযর্ন্ত পানিতে নেমে অসহায় মানুষের কথা তুলে ধরতে, সবাই এসির রুমে বসে বাতাস গ্রহণ করছে, আর সাংবাদিক পানিতে নেমে সংবাদ সংগ্রহ করছে।
একটিবারো কি ভেবে দেখেছেন।
লেখায় ভুল হলে_ক্ষমা_দৃষ্টিতে দেখবে।।