মোঃ রমজান শিকদার, ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি-২৮/৫/২২
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন সংখ্যালঘু পরিবারের নিতাই চন্দ্র মল্লিক। সে সময় স্বামীকে হারিয়ে ৫ মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী পুষ্পরানি মল্লিক চরম অসহায় দিনযাপন করেন। ধীরে ধীরে ৫ মেয়েকে বিয়ে দিয়ে বিগত ৫ বছর আগে পুষ্পরানি মল্লিক মারা যায়। মারা যাবার পর ৫ মেয়ে জন্য স্বামীর ভিটায় একটি বসতঘর রেখে যায়। কোন পুত্র সন্তান না থাকায় সে ঘরটিও কালের বিবর্তনে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। পার্শ্ববর্তী লোকজন ঘরের ভিতরে থাকা আসবার পত্র সহ ঘরের খাম গুলো নিয়ে যায়। ৫মেয়ে স্বামীর সংসারে থাকার সুবাদে স্থানীয় বিত্তশালীরা ধীরে ধীরে শহীদ নিতাই চন্দ্র মল্লিকের বসতঘর অধিকাংশ জায়গা দখল করে নেয়। বেদখল হয়ে যাওয়া সম্পত্তি উদ্ধারে মেয়েরা দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার পৌর সদরের চন্ডীদাস গ্রামের একটি সংখ্যালঘু পরিবারে।
খবর পেয়ে নিতাই চন্দ্র মল্লিকের মেয়ে চায়না মল্লিক ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে ভাঙ্গা এসে পৈত্রিক ভিটা উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। জায়গাটি ভিপি সম্পত্তি রূপান্তরিত হওয়ায় ভূমি অফিসের বিভিন্ন ঝক্কি-ঝামেলা শেষ করে নিজেদের নামে করে নেন। এতেও শেষ রক্ষা হয়নি স্বামীর সংসার এর টানে মেয়েকে পুনরায় ঢাকা চলে যেতে হয়েছে।খবর পেয়ে পাঁচ বোনের দুই বোন পুনরায় পত্রিকা উদ্ধারের চেষ্টা চালায় মামলা মোকদ্দমা সহ স্থানীয়দের দেনদরবারে কোন সুরাহা পাননি উল্টো প্রাণনাশের হুমকি সহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। শনিবার বিকালে শহীদ নিতাই চন্দ্র মল্লিক এর দুই মেয়ে চায়না মল্লিক ও সবিতা রানী মজুমদার স্থানীয় সাংবাদিকদের ডেকে তার পৈত্রিক ভিটা উদ্ধারের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাছে আবেদন করেন। এসময় চায়না মল্লিক জানায়, তার বাবাও চাচাদের পাক হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে খুন করেন। পরবর্তীতে আমার দাদা অতুল চন্দ্র মল্লিক আমার মা পুষ্পরানি মল্লিককে বসতভিটা জায়গা লিখে দেয়। আমার মা সেসময় আমাদেরকে অনেক কষ্ট করে লালন-পালন করে বিবাহ দেন। আমরা পাচ বোন বিবাহ করে স্বামীর সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকি। এরই ফাঁকে আমাদেরই বংশের লোকজন আমাদের অনুপস্থিতিতে আমার ঘরের ভেতরে থাকা সমস্ত মালামাল নিয়ে যায়। ঘরটি ভেঙে পড়লে সে ঘরের টিনগুলো আশপাশের লোকজন নিয়ে যায়। সম্প্রতি আমি আমার পৈতৃক ভিটায় ঘর মেরামত করতে গেলে বিত্তশালীদের সহায়তায় একটি প্রভাবশালী মহল আমাকে বাধা দেয় এবং হুমকি দিয়ে চলে যেতে বলে । আমার এক ভাই মুক্তিযোদ্ধা আমার ভাইয়ের নামে সরকারের পক্ষ থেকে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করে দিয়ে গেছেন। আমরা এখন বড় অসহায় হয়ে পড়েছি।আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর প্রতিকার চাচ্ছি।