নিরঞ্জন মিত্র(নিরু) (ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (সগবি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), ফরিদপুর এর সহযোগিতায় এবং আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্র, বারি, মাদারীপুর এর আয়োজনে ‘‘বাংলাদেশে তৈলবীজ ও ডাল ফসলের গবেষণা ও উন্নয়ন’’ প্রকল্পের অর্থায়নে গত (৩০ নভেম্বর) মঙ্গলবার সগবি অফিসে ডাল ফসলের আধুনিক উৎপাদন কলাকৌশল, বীজ সংরক্ষণ এবং প্রযুক্তি সম্প্রসারন শীর্ষক কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
সগবি’র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, এ.এফ.এম. রুহুল কুদ্দুস এর সঞ্চালনায় কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ত্ব করেন সগবি, বারি, ফরিদপুর অঞ্চলের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম আহম্মেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্র, মাদারীপুর এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. ছালেহ উদ্দিন।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্র, মাদারীপুর এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নন্দ দুলাল কুন্ডু ও মো. শাহিন। বক্তারা বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের কৃষিতে ডাল ফসল খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণ, দারিদ্র বিমোচন ও পুষ্টিহীনতায় ভোগা বিশাল জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আমিষের অন্যতম প্রধান উৎস। ডালফসলে আমিষের পরিমাণ ২০ থেকে ৩০%। এজন্য ডালকে গরিবের মাংস বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ডাল ফসলের আবাদী জমির পরিমাণ প্রায় ১০ লক্ষ হেক্টর যা মোট আবাদি জমির শতকরা ১২ ভাগ এবং উৎপাদিত ডালের পরিমান ১০ লক্ষ মেট্রিক টন। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিদিন একজন মানুষের ৪০-৪৫ গ্রাম ডাল খাওয়া উচিত, সে তুলনায় আমরা ভক্ষণকরি মাত্র ১৭ গ্রাম। অপর্যাপ্ত উৎপাদনের জন্য এদেশের জনগণের মাথাপিছু দৈনিক ডালের প্রাপ্যতা খুবই কম। কৃষকের ডাল ফসলের উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ডালের অনেক লাগসহ জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এধরনের জাত ও প্রযুক্তি সম্বন্ধে কৃষককে জানানোর জন্যই এধরনের কৃষক প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়েছে। ফলে কৃষক ডাল ফসলের কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা, ক্ষতিকারক পোকামাকড় ও রোগ-বালাই সনাক্তকরন ও তাদের বালাই ব্যবস্থাপনা এ প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে কৃষক জানতে পারবে। কৃষকদের বারি উদ্ভাবিত নতুন জাত ও প্রযুক্তি দ্বারা ডাল ফসল আবাদের জন্য প্রধান অতিথি অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট বৈজ্ঞানিক সহকারী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে মোট ২৫ জন কৃষক ও কিষাণী অংশগ্রহন করেন।
কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কারিগরী পর্বে পাওয়ার পয়েন্ট এর মাধ্যমে তাত্ত্বিক উপস্থাপনা দেখানো হয়। ডাল ফসলের আধুনিক প্রযুক্তি যেমন নতুন নতুন ফসলের সংযোজন, কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা যেমন সার, সেচ ও আন্তঃপরিচর্যা, বালাই ব্যবস্থাপনা এবং ফসল সংগ্রহ প্রযুক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তা আলোচনা করেন। বক্তব্য প্রদান শেষে প্রশ্ন উত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণ শেষে সভাপতি মহোদয় আগত অতিথি, কৃষক ও অন্যান্য কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।