নিজস্ব প্রতিনিধি :-”নারী নির্যাতন বন্ধ করি, কমলা রঙের বিশ্ব গড়ি”এই স্লোগানকে সামনে রেখে ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগ কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার (ইএএলজি) প্রকল্পের সহযোগিতায়, জেলার ভাঙ্গা উপজেলায় নারী নির্যাতন বিরোধী ১৬ দিনব্যাপী কর্মসূচীর অরেঞ্জ ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুরুতে কমলা রঙের বেলুন উড়িয়ে অরেঞ্জ ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করা হয়।
(০১ ডিসেম্বর ) বুধবার সকালে ভাঙ্গা সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাজী মাহাবুব উল্লা হল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
পরবর্তীতে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের আয়োজনে, কাজী মাহাবুব উল্লা হল রুমে এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস.এম হাবিবুর রহমান এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে প্রায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সময়ে বহু শিক্ষার্থীর বিয়ে দিয়েছে পরিবার। এরমধ্যে অধিকাংশই বাল্যবিবাহের শিকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু হওয়ার পর এসব বিষয় দ্রুত সামনে আসতে থাকে। শিক্ষার্থীদের সাথে সংলাপের আলোচ্য বিষয় জানতে পারেন।
অন্যদিকে বাল্যবিবাহের শিকার এসব শিক্ষার্থী স্কুলজীবনে আগের মতো ফিরতে পারবে কিনা এটা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বাল্য বিবাহের শিকার অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে অনুপস্থিত। কিছু শিক্ষার্থী ঝরে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা ইসাহাক মোল্লা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারুলী আখতার, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দেবলা চক্রবর্তী, সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়দার হোসেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমেদ জামসেদ, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ইলা রানী কুন্ডু প্রমূখ।
এসময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেসমিন আক্তার, নীলা আক্তার প্রমুখ।
নারী নির্যাতন বিরোধী অরেঞ্জ ক্যাম্পেইন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে একজন নারী শিক্ষার্থীর বক্তব্যে বলেন, চলতি বছরের শুরুতেই বিয়ে হয়েছিল। আমি বিয়েতে রাজি ছিলাম না। ছোট বয়সে বিয়ে হওয়ায় আমার শরীরে খুব অসুবিধা হয়। এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছি। আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে খুব কষ্টে আছি। আমি চাই আর কারও যেন বাল্যবিয়ে না হয় উল্লেখ করেন শিক্ষার্থী।
যেভাবে বাল্যবিয়ে বেড়েছে তাতে ভাবনায় পড়েছি। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করতে গেলে প্রশাসনের সহায়তা দরকার। এটি প্রতিরোধ করতে না পারলে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত খারাপ হয়ে দাঁড়াবে।
নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন সময় কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য মোসাঃ মেরিনা আক্তার, মোসাঃ ফরিদা আক্তার ও মোসাঃ নুরুন্নাহারকে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
সভা শেষে ভাঙ্গা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীগণ সংগীত পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ইউএনডিপি ইএএলজি’র ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর মোঃ মনির হোসেন মজুমদার।