• ঢাকা
  • রবিবার, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মে, ২০২৪ ইং
চরভদ্রাসন পদ্মায় চলছে রেনুপোনা নীধনের মহোৎসব

চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ঃ
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীতে চলতি বৈশাখ মাসের শেষের দিকে এসে জোয়ারের পানিতে ছয়লাব হয়ে গেছে পদ্মা পার এলাকা। এ মৌসুমে নতুন পানিতে মৎস্য প্রজাতি বংশ বিস্তারের জন্য ডিম ও রেণুপোনা ছেড়ে থাকে। এ সুযোগে স্থানীয় কিছু অসাধু জেলে মৎস্য প্রজাতি নীধনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। তারা পদ্মা নদীর পার জুড়ে পানির মধ্যে দিয়ে শত শত বাঁশ পুতে চায়না দুয়ারীর ফাঁদে, মশারী জাল, বেড়জাল, কারেন্ট জাল ও ডিম জালের ফাঁদে ফেলে নীধন করে চলেছে মৎস্য প্রজাতি। এছাড়া রাতের আধারে পদ্মার পার এলাকার পানিতে কীটনাশক ঔষধ প্রয়োগ করেও নীধন করা হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মৎস্য সম্পদ।

খোজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা মৎস্য অফিসার ছয়মাসের ট্রেনিংয়ে থাকার কারনে উপজেলা পদ্মা নদীতে অবাধে চালানো হচ্ছে মৎস্য সম্পদের ধ্বংসযজ্ঞ। তবে রবিবার উপজেলা মৎস্য অফিসা (অ.দা) এসএম জাহাঙ্গীর কবির বলেন, “আমি পার্শ্ববতী সদরপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার হিসেবে পোষ্টিংরত আছি। আমাকে চরভদ্রাসন উপজেলায় দায়িত্ব দেওয়ার পর মাত্র একদিন আমি অফিসে গিয়েছি। আমি চরভদ্রাসন উপজেলার সব এলাকা চিনিও না। তবে খোজ খবর নিয়ে পদ্মা নদীতে অভিযান পরিচালনার ব্যাবস্থা নেবো”।

সরেজেিন পদ্মা পার এরাকা ঘুরে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলা পদ্মা নদীতে জোয়ারের পানি আসার সাথে সাথে পার এলাকা জুড়ে শত শত বাঁশ পুতে দুই বাঁশের সংযোগ জলমহলে ফেলে রাখা হচ্ছে বিশাল বিশাল আকৃতির চায়না দোয়ারী। প্রতিটি চায়না দোয়ারী ৫০/৬০ হাজার টাকা দরে কিনে এনে অসাধু জেলেরা মৎস্য সম্পদ নীধন করে চলেছে। এসব চায়না দোয়ারীতে ছোট বড় মাছ, রেণুপোনা, এমনকি মাছের ডিমও আটকা পড়ছে। একই সাথে পদ্মা নদীর বুক জুড়ে প্রতিদিন বিশাল বিশাল মশারী ও কাথা বেড় জাল দিয়ে পানির মধ্যে থেকে ছাকনীর মত সর্বপ্রকার মৎস্য প্রজাতি ছেকে উঠিয়ে নীধন করা হচ্ছে। প্রতিটি বেড়জাল প্রায় তিন কি.মি. জলমহল এলাকা ঘেরার পর জালের দুই দিক থেকে তিনটি ট্রলারযোগে প্রায় ২০ জন জেলে ধিরে ধিরে জাল তুলে পানির নিচ থেকে ছেকে তুলছেন মৎস্য প্রজাতি।

রবিবার উপজেলা পদ্মা নদীতে মৎস্য প্রজাতি নীধনযজ্ঞ কাজেরত জেলে বিকাশ হালদার, মিশুক হালদার, বিন্দো হালদার ও কোমল হালদার সহ অনেকে জানায়, “ প্রতিটি বেড়জাল ও ট্রলার তৈরী করতে ৮/১০ লাখ টাকা ব্যায় হয়েছে। সবকিকছুই মালিকের আমরা শুধু লেবারের মত মাছ ধরার কাজ করি। তাই প্রতিদিন ভোরে বিক্রিত মাছের শতকরা ৬০ ভাগ আমরা জেলেরা নেই এবং বাকী ৪০ শতভাগ টাকা আড়ৎদারদের দিয়ে আসি। জেলেরা আরও জানায়, আড়ৎদাররা তাদের টাকা পয়সার যোগান সহ আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়ে পদ্মা নদীতে জাল বাওয়ায়। তাই তারা আইন-বেআইনের বিষয়টি বুঝে না বলেও জানায়”।

খোজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা পদ্মা নদীর দিয়ারা গোপালপুর মৌজা, চর কল্যানপুর মৌজা, চর কালকিনিপুর, চর তাহেরপুর, চর মির্জাপুর, চর শালেপুর, উত্তর শালেপুর, ভাটি শালেপুর, চর হাজীগঞ্জ মৌজা, চর মোহনমিয়া, মাঝিকান্দি, চরহরিরামপুর, চর ঝাউকান্দা, চর হোসেনপুর, জাকেরের সুরা মৌজা, টিলারচর মৌজা, মাথাভাঙ্গা ও চর মঈনট মৌজার বিশাল বিশাল জলমহলে দিন রাত নিষিদ্ধ জাল দিয়ে চালানো হচ্ছে মৎস্য প্রজাতি নীধনের মহোৎসব।

প্রতিদিন পদ্মা নদীর এসব এলাকা থেকে মাছ ধরে এনে জেলেরা উপজেলার চর মঈনট ঘাটের ২০টি আড়তে, চরহাজীগঞ্জ বাজারে চারটি আড়তে মৌলভীরচর বাজারে দুইটি, আমিন খার হাটে তিনটি, মাসুদ খার হাটে দুইটি ও আঃ হাই খান হাটে দুইটি সহ প্রায় ৩৫টি আড়তে সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মৎস সম্পদ।
#
মোঃ মেজবাহ উদ্দিন
চরভদ্রাসন, ফরিদপুর
তাং-০৫/০৫/২০২৪খ্রি.
০১৭২৪-২৫১৫৮৮।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।