• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাকি বাইডেন

ছবি সংগৃহিত

আজ যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। রিপাবলিকান প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চার বছরের জন্য আবারও থাকবেন, নাকি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় বসবেন তা নির্ধারিত হবে ভোটারদের ভোটে। ইতোমধ্যে আগাম ভোটের রেকর্ড হয়েছে। এক শতাব্দী পর এবারই সর্বোচ্চ ভোট পড়তে যাচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যেও অনিশ্চয়তা আর শঙ্কা দানা বাঁধছে মার্কিনিদের মধ্যে। কারণ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হেরে গেলে পরাজয় মেনে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দেননি।

শতাব্দীর সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে। মহাশূন্য থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ভোটে অংশগ্রহণ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নানা রকম শর্তের কারণে আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে না পারার উদ্বেগে এবার রেকর্ড ৯ কোটিরও বেশি ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন, যা নিবন্ধিত মোট ভোটারের ৬৭ শতাংশের বেশি।
তবে সবার চোখ এখন দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে। ফ্লোরিডা, জর্জিয়া ও নর্থ ক্যারোলিনায় ভোটযুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি জো বাইডেন এগিয়ে আছেনÑ তা জানতে উদগ্রীব মানুষ। নতুন নতুন জরিপে কী আভাস মিলছে, তা নিয়ে ভোটারদের কৌতূহল কমছেই না। এই তিন রাজ্যের পাশাপাশি নতুন করে আলোচনায় এসেছে টেক্সাস রাজ্য। সেখানে জনমত জরিপে নাটকীয়ভাবে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন এগিয়ে গেছেন। এটি রিপাবলিকান অধ্যুষিত রাজ্য হিসেবেই খ্যাত।
অনেকে এ ছাড়া আরও পাঁচটি রাজ্যকে আসন্ন নির্বাচনের জন্য দোদুল্যমান রাজ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যের বেশিরভাগ ডেমোক্র্যাটের ঘাঁটি অর্থাৎ ‘নীল রাজ্য’ কিংবা রিপাবলিকানদের ঘাঁটি অর্থাৎ ‘লাল রাজ্য’ হিসেবে পরিচিত হলেও দোদুল্যমান রাজ্যের ভোট যেকোনো দিকে পড়তে পারে। ১৩ রাজ্যে দুই প্রার্থীর ব্যবধান অল্প। এসব রাজ্যের ভোটাররা কাকে ভোট দেবেন তা আগে নিশ্চিত হওয়া যায় না। তাদের মন জয়ের চেষ্টায় সোমবার (যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময়) ট্রাম্প যাবেন নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভানিয়া, উইসকনসিন ও মিশিগানে আর বাইডেন যাবেন পেনসিলভানিয়া ও ওহাইওতে।
ঐতিহ্যগতভাবে মিশিগান ও উইসকনসিন ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি হলেও ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই দুই রাজ্যে সামান্য ব্যবধানে জয় পান রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইডেন এবার হারানো এসব ডেমোক্র্যাট ঘাঁটি পুনরুদ্ধারের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। ট্রাম্প চাচ্ছেন গত নির্বাচনের মতো সাফল্য ধরে রাখতে। মিশিগানে ইলেকটোরাল কলেজের সংখ্যা ১৬। উইসকনসিন ১০। বাইডেন যদি গত নির্বাচনে হিলারির পাওয়া সব ভোটের সঙ্গে ট্রাম্পের কাছ থেকে এই দুই রাজ্য উদ্ধারও করেন তারপরও প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ন্যূনতম ২৭০ ভোট হবে না। তবে এর সঙ্গে পেনসিলভানিয়া (২০) দখলে নিতে পারলে তার জয় নিশ্চিত।
নির্বাচনি জরিপে বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। সিএনএন বলছে, ২৭০ ইলেকটোলার ভোট পাওয়ার কাছাকাছি বাইডেন। এদিকে শেষ মুহূর্তে এসে প্রচারণায় জোর দিয়েছেন বাইডেন। নির্বাচনে ট্রাম্পকে জিততে অবশ্যই তাকে সুইং স্টেটগুলোতে জিততে হবে। কিন্তু বেশিরভাগ সুইং স্টেটে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। টেক্সাসেই ৩৯টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট রয়েছে, যা রাজ্য হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রাজ্যে হারলে ট্রাম্পের জন্য ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে। এমন অবস্থায় সব সুইং স্টেটে জয় নিশ্চিত করে বিজয় পেতে হবে ট্রাম্পকে।
মার্কিন নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে যিনি ২৭০ ভোট পাবেন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। এই ৫৩৮ ভোটের মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫, সিনেটের ১০০ এবং রাজধানী ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার ৩ ভোট। একটি রাজ্যে যিনি সর্বোচ্চ ভোট পাবেন তিনি রাজ্যের সব ইলেকটোরাল ভোট জিতবেন।
নিউইয়র্কের বাইডেন সমর্থক ব্যাংক কর্মকর্তা সুজন আফজাল বলেন, কোনো কারণে ফ্লোরিডায় জয় না পেলেও বড় জয় পাবেন বাইডেন। তিনি এবার রিপাবলিকানদের ঘাঁটি টেক্সাসেও জয়ী হবেন। পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, উইসকনসিনেও নিশ্চিতভাবে জয় পাবেন বাইডেন। এ রাজ্যগুলোর ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা যথাক্রমে ২০, ১৬ ও ১০। ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের জরিপ অনুযায়ী টেক্সাসে ৩ পয়েন্টে এগিয়ে বাইডেন। ধারণা করা হচ্ছে, হিস্পানিকদের ভোটে এগিয়ে গেছেন তিনি। ১৯৭৬ সালে জিমি কার্টারের পর সেখানে আর কোনো ডেমোক্র্যাট জয় পাননি।
যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতিমান ইতিহাসবিদ অধ্যাপক অ্যালেন লিখটম্যান জানিয়েছেন, এবার প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন বাইডেন। ওয়াশিংটন ডিসির আমেরিকান ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের এ অধ্যাপক ১৯৮৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি নির্বাচনের ফল আগে থেকেই বলে দিয়েছেন। ২০০০ সালের নির্বাচন বাদে সবগুলো একেবারে সঠিক হয়েছে। যদিও ওই বছরের নির্বাচনটি সুপ্রিমকোর্টের রায়ে ফয়সালা হয়েছিল। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী আল গোর হেরেছিলেন রিপাবলিকান জর্জ বুশের কাছে। লিখটম্যানের ভবিষ্যৎ ভাষ্য ভোটারদের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। প্রেসিডেন্ট হতে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের প্রয়োজন। সেখানে বাইডেন ৩০৭ থেকে ৩১০টি ইলেকটোরাল ভোট পাবেন বলে মনে করেন লিখটম্যান।
সিবিএস নিউজের সাংবাদিক এলেনা কক্স জানান, ফ্লোরিডায় কালো ভোটারদের মধ্যে বাইডেনের সমর্থন ৯২ শতাংশ। জর্জিয়া ও উত্তর ক্যারোলিনায় বাইডেনও পাচ্ছেন হিলারি ক্লিনটনের মতোই কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের সমর্থন। এলেনা কক্স জানান, এই রাজ্যেগুলোর শহুরে অঞ্চলগুলো বাইডেনের পক্ষে। অপেক্ষাকৃত গ্রামীণ অঞ্চলগুলো ট্রাম্পের পক্ষে। শহরতলির কম বয়সি এবং অশেতাঙ্গরা বেশিরভাগ ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিচ্ছেন এবং প্রবীণ শেতাঙ্গ ভোটাররা আগের মতোই ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দিচ্ছেন

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।