• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
বন্যপ্রাণী রক্ষায় সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে -পরিবেশ ও বনমন্ত্রী

ঢাকা, ১৮ ফাল্গুন (৩ মার্চ) :

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বন্যপ্রাণী রক্ষায় সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। বাঘ, হাতি, হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী রক্ষায় সংরক্ষিত ও প্রাকৃতিক বনাঞ্চল হতে গাছ কাটা বন্ধ করা এবং আইন ও বিধিমালা যুগোপযোগীকরণসহ বিভিন্ন কার্যকরী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।  তিনি হাতি নিধন রোধ ও সুন্দরবন অঞ্চলে কীটনাশক দিয়ে মাছ শিকার বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে প্রধান বন সংরক্ষককে নির্দেশ দেন।

আজ বন অধিদপ্তরে ‘মানুষ ও পৃথিবী বাঁচাতে : বন ও জীবিকা’ প্রতিপাদ্য ধারণ করে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস-২০২১ উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বন্যপ্রাণী রক্ষায় বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন যৌথ উদ্যোগের উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, উভয় সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ, বাঘ ও শিকারি প্রাণী পাচার বন্ধ, দক্ষতা বৃদ্ধি, মনিটরিং ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রটোকল ও একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে।  হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণ ও করিডোরের মাধ্যমে বন্য হাতির নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আন্তঃদেশীয় হাতি সংরক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রোটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে।  বাঘ, হাতি ও কুমিরের আক্রমণে নিহত বা আহত মানুষের ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য নিহত ব্যক্তির পরিবারকে এক লাখ ও আহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হচ্ছে। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ৯৬১ জনকে প্রায় ৩.৭১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়েছে। এ ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

বনমন্ত্রী বলেন, বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ২০২০ সালে প্রায় তিন হাজার বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ৪৬ জন অপরাধীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার বন্ধে এ সংক্রান্ত অপরাধ দমনে সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনাকে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করে সরকার ৪৯টি এলাকাকে ‘রক্ষিত এলাকা’ ঘোষণা করেছে। বন্যপ্রাণীর বংশবিস্তার ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে কক্সবাজার ও গাজীপুরে ২টি সাফারি পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলায় ১টি নতুন সাফারি পার্ক স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ও তাদের আবাসস্থল সংরক্ষণে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য দেশব্যাপী নানাবিধ সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন,  বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে জাতীয়ভাবে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু এওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ প্রবর্তন করা হয়েছে।  বন্যপ্রাণী বিষয়ক অপরাধ নিরসনের লক্ষ্যে ‘অপরাধ উদঘাটনে তথ্য প্রদানকারীকে পুরস্কার প্রদান বিধিমালা, ২০২০’ জারি করা হয়েছে। সম্প্রতি সরকার ‘মহাবিপন্ন’ শকুন রক্ষায় ‘কিটোপ্রোফেন’ জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধের উৎপাদন বন্ধ করে ‘ম্যালোক্সিক্যাম’ নামে একটি ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করেছে। বনমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১১৬৩ প্রজাতির বৈচিত্র্যময় প্রাণীর আবাসভূমি আমাদের বাংলাদেশ। বিগত একশ বছরে আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে গেছে ৩১ প্রজাতির বন্যপ্রাণী। আমাদের টিকে থাকার জন্য বন ও বন্যপ্রাণীর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে বন, বনজ সম্পদ ও প্রাণীকূলকে রক্ষা করতে হবে।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান, অতিরিক্ত সচিব মাহমুদ হাসান; প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু এবং আইইউসিএন, বাংলাদেশ এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ রাকিবুল আমীন প্রমুখ। গাজীপুর শেখ কামাল ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টার এর পরিচালক মোঃ জাহিদুল কবির এবং অধ্যাপক  ড. এম মুনিরুল এইচ  খান  দুটি প্রজেন্টেশন দেন এবং বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে স্বাগত  বক্তব্য রাখেন।

সুন্দরবনে বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার  জন্য পরিবেশ,  বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী অনুষ্ঠানে প্রধান বন সংরক্ষকের হাতে ড্রোন তুলে দেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

তারিখ অনুযায়ী খবর

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।