নিরঞ্জন মিত্র( নিরু) ( ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি)
প্রথমা স্ত্রী তালাক হয়েছে তো কি হয়েছে নানা পন্থায় মহিলাদের সঙ্গে নিপীড়ন অব্যাহত। প্রথমা স্ত্রীকে রেখে স্বামীর দ্বিতীয় বিবাহের পরে, প্রথমা স্ত্রীকে তালাক ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযোগ উঠেছে।
ফরিদপুর সদরের গেরদা ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এক অসহায় প্রথমা স্ত্রী ফরিদা বেগম (পরি) (৭০) নামে বয়েসের এক মহিলা। ইউনিয়নের মুন্সিবাজার কাফুরা গ্রামের সৈয়দ বাদশার মেয়ে ফরিদা বেগম (পরি) এর মুসলিম ধর্মীয় মতে তাদের আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। একই ইউনিয়নের ইকরি গ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুল লতিফ মিয়ার পুত্র দেলোয়ার হোসেন (দিলু)(৪০) এর সঙ্গে। বিবাহের ১৫ মাস পর একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। এর পর আর কোন সন্তান জন্ম হয় নাই। এভাবেই দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত একসাথে ঘর সংসার করে চলে আসছিলো উভয় দম্পতির।
বিবাহের পর কোন পুত্র সন্তান না হওয়ায় স্বামী দেলোয়ার হোসেন ৭ বছর আগে পুনরায় দ্বিতীয় বিবাহ করেন। বর্তমানে দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এসময় স্বামী দেলোয়ার হোসেনের প্রথমা স্ত্রী ফরিদা বেগমের সাথে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এখন জীবনের শেষ বয়সের দিকে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত প্রথমা স্ত্রীর উপরে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী দেলোয়ার হোসেনের নামে। প্রথমা স্ত্রী ও দ্বিতীয় স্ত্রী পাশাপাশি একই জায়গায় পৃথক দুইটি বাড়ীতে বসবাস করে। দেলোয়ার হোসেন দ্বিতীয় স্ত্রী রুপা বেগম (৩৫) কে নিয়ে বর্তমানে ঘর সংসার করে আসছে।
এদিকে প্রথমা স্ত্রীকে দীর্ঘ ৭ বছর খোঁজখবর নেয়নি এমনটা ফরিদা বেগম পরি জানান, বিভিন্ন ভাবে অজুহাতের মাধ্যমে আমাকে দিয়ে, আমার বাবার বাড়ীর কাফুরা মৌজার ৯৭-৯৮ সালে দুইটি দলিলে জমি বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেয় আমার স্বামী দেলোয়ার হোসেন। স্বামীর ব্যাক্তি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য ছিলো আমার সাথে প্রতারনা। এপর্যায়ে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্যের কথা ভুলে অন্যায় অত্যাচার নিরবে মুখ বুঝে সহ্য করেছি। তার অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বেরে যাওয়ায় আমার নির্দয়তামুলক আচরন করার পরেও তিনি বিভিন্ন ভাবে ভাড়াটিয়া লোকজনের মাধ্যমে আমার নিকটে এসে আমাকে জীবন নাশের হুমকি দেয় এবং বলেন বিবাহটি তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে । বাড়ী থেকে চলে যাওয়ার কথা বলে। এছাড়া আমাকে তারিয়ে দিওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে আমার নামে মিথ্যা অপবাদ প্রচার করে নিজের কুউদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য চেষ্টা করছে। এমনকি মিথ্যা আইনগত ভাবে হয়রানী করার পায়তারা করছে।
স্বামী দেলোয়ার হোসেনের সাথে পারিবারিক গোলযোগ হওয়া আমি বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে ২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারা মোতাবেক কোতয়ালী সি আর ৬১১/২০ নং একটি মামলা দায়ের করি। যে মামলাটি এখন চলমান রয়েছে। এই মামলায় দেলোয়ার হোসেনের ভারাটিয়া লোকজন দিয়ে জামিনে থাকা অবস্থায় মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি প্রদর্শন করে। এমত অবস্থায় আমার বাড়ীতে শুধু একা থাকায় নিরাপত্তহীনের মধ্যে আছি।
এলাকাসূত্রে জানা যায়, বিষয়টি এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তি দেলোয়ার হোসেনকে স্ত্রীকে ভরণ পোষোন ও এক সাথে সংসার করার জন্য নিস্পত্তির জন্য উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু দেলোয়ার হোসেন প্রথমা স্ত্রীকে গ্রহন করতে আন্তরিক না হওয়ায় উভয় পক্ষের বিরোধ নিস্পত্তি করা সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে দেলোয়ার হোসেন জানায়, আমি যখন ৮ ম শ্রেণীর ছাত্র আমাকে জোর পূর্বক ফরিদা বেগম পরি এর সঙ্গে বিবাহ দেন। গত ৯/৮/২০২০ প্রথমা স্ত্রীকে আইন মোতাবেক তালাক দিয়েছি। তার পুত্র সন্তান না হওয়ায়। তার সাথে সংসার করা সম্ভব নয়, তাই পুনরায় বিবাহ করেছি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি আরো জানান, আমার প্রথমা স্ত্রীর চাচারা বার বার মারধর করে এবং বিভিন্ন হুমকি প্রদান করে। এক কথায় তিনি বলেন তাকে ভরনপোষণ দেওয়া সম্ভব না।