স্বামী-সংসার নিয়ে জুলেখা খাতুনের দিনকাল বেশ ভালই চলছিল। কিন্তু এরই মধ্যে মহামারি করোনা ভাইরাস এলো তার জীবনে অভিশাপ হয়ে। লকডাউনের ফাঁদে পড়ে বন্ধ হয়ে গেল পরিবারের উপার্জন। বাসা ভাড়া দিতে না পেরে অবশেষে জীবনটাই দিয়ে দিতে হলো জুলেখাকে।
গত (৩০ এপ্রিল) বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুরে বাসা ভাড়া দিতে না পারায় গর্ভবতী জুলেখা খাতুনের শরীরে আগুন দেন তার বাড়িওয়ালা বজলুল হকের ছেলে রনি। এরপর থেকেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের বেডে শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন দগ্ধ জুলেখা। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে লড়তে অবশেষে হেরে গেলে এই নারী। আজ শুক্রবার (৮ মে) বেলা ১২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত জুলেখা অন্ত:সত্ত্বা ছিলেন। তার গর্ভে ফুটফুটে ৯ মাসের সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু মায়ের গর্ভেই আবার ফিরে যেতে হলো, পৃথিবীর আলো আর দেখা হবে না তার। গর্ভে থাকা অনাগত সন্তানকে নিয়েই মৃত্যুবরণ করেন জুলেখা।
নিহত জুলেখা কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বহলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সাহেবনগর এলাকার মেহেদী হাসানের স্ত্রী।
কুষ্টিয়া মডেল থানার (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান,আজ বেলা ১২টার দিকে গর্ভবতী জুলেখা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এদিকে ঘটনার দিনই অভিযুক্ত বাড়িওয়ালার ছেলে রনিকে আটক করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ঘটনার দিন বাসা ভাড়া দিতে না পারায় জুলেখার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয় বাড়িওয়ালা বজলুল হকের ছেলে রনি। পরে জুলেখার চিৎকারে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে গেলে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে গতরাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হলে আজ বেলা ১২টায় তার মৃত্যু হয়।